glaxo-20180727184318-1মোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ওষুধ ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে রয়েছে। তবে অন্যান্য ইউনিট নিয়ে একত্রে মুনাফায় ছিল। আর এই মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে লোকসানে থাকা ওষুধের ইউনিটটি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক।

সম্প্রতি রাজধানীর এক হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নকিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে, ওষুধের ইউনিট বন্ধের পিচনে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী ও কর্মকর্তারা।

এম আজিজুল হক বলেন, আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট লোকসানের। তবে সব ইউনিট মিলে মুনাফা হয়। তবে ওষুধের ইউনিটের লোকসানের কারনে মুনাফার পরিমাণ কমে যেত। তাই ওষুধের ইউনিটটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের মুনাফা বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ব্যবসার ৭০ শতাংশই কনজুমার হেলথকেয়ারের। বাকি ৩০ শতাংশ ফার্মাসিউটিক্যালের। ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের বাণিজ্যিক কর্যক্রম বন্ধ করা হলেও গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের কনজুমার হেলথকেয়ার কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।’

১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কারখানা চালিয়ে আসা এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়। তবে জিএসকের কনজিউমার হেলথকেয়ার ইউনিট বাংলাদেশে হরলিকস, মালটোভা, গ্ল্যাক্সোজ-ডি, সেনসোডাইনের মত পণ্য বিক্রি চালিয়ে যাবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

জিএসকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ হওয়ার কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়া এক হাজারের বেশি কর্মীকে তারা যথাযথ প্রাপ্য পরিশোধ করবে এবং ইউনিসেফের মাধ্যমে সরকার গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের যে ভ্যাকসিন কিনত, তাও বাংলাদেশে পাওয়া যাবে।

এম আজিজুল হক বলেন, বাংলাদেশে আমাদের ওষুধগুলো অনেক দিনের পুরনো, আর অনেক সস্তা। আমরা ব্যবসার ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে পারছিলাম না। সেই ঘাটতি পোষানোর মত নতুন কোনো ওষুধও আমাদের পাইপলাইনে ছিল না।”
এর উদাহরণ দিতে গিয়ে আজিজুল হক বলেন, জিএসকে যখন তাদের নতুন শিংগলস (কোঁচদাদ) ভ্যাকসিন চালু করে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তা দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।

কিন্তু ওই ভ্যাকসিন বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হয়নি কারণ বাংলাদেশের বাজারের জন্য সেটা উপযুক্ত নয়। “আমরা নতুন কোনো ওষুধ আনতে পারিনি, যা বাংলাদেশের বাজারের জন্য উপযুক্ত। ঘাটতিটা আমরা আর পূরণ করতে পারিনি।”

গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের তাদের কারখানা বন্ধ বা বিক্রি করে দিতে পারে বলে গত কয়েক দিন ধরেই বাজারে গুঞ্জন ছিল। কারখানা বন্ধের ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ অভিযোগ করে কোম্পানির কর্মীরা দুদিন আগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনও করেন।