z cateদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে নতুন আতঙ্ক জেড’ ক্যাটাগরি। গুজবেই বাড়ানো হচ্ছে “জেড” এর শেয়ার দর
আর কোনো ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হবে না’ এমন গুজব ছড়িয়ে কৃত্রিমভাবে আবারো ‘জেড’ ক্যাটাগরির উৎপাদনে না থাকা দুর্বল কোম্পানিগুলোর দর বাড়ানো হচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুনরায় কারসাজি চক্রের জালে আটকে পড়ে পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইংয়ের তালিকাচ্যুতির পর আরো ১৭ কোম্পানির তালিকাচ্যুতির তালিকায় রয়েছে। এসব কোম্পানিকে আইন অনুযায়ী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চাইলে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করতে পারে। কোম্পানিগুলো হলো: বিডি ওয়েল্ডিং, বিডি সার্ভিস, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, দুলামিয়া কটন,

আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ইমাম বাটন, ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক, জুট স্পিনার্স, কে অ্যান্ড কিউ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পেট, সমতা লেদার, সাভার রিফ্যাক্টরীজ, শ্যামপুর সুগার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, শাইনপুকুর সিরামিকস এবং জিলবাংলা সুগার মিলস লিমিটেড।

রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইংয়ের তালিকাচ্যুতির পর উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কারেকশন হতে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা বাজারে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে আর কোনো ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হবে না। এরপর থেকেই আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির দুর্বল মৌলভিত্তি কোম্পানির শেয়ার দর।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, যেসব কোম্পানি অত্যন্ত দুর্বল এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের টিম বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তদন্ত করছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর একটি সিদ্ধান্ত আমরা যাবো।

জানা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিষ্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এর ৫১ (১) ধারায় কোনো কোম্পানিকে ডি-লিষ্টিং করার জন্য চারটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোম্পানি যদি ৫ বছর ধরে ডিভিডেন্ড না দেয়, যদি কোনো কোম্পানি টানা তিনটি বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হয়, কোম্পানির স্বেচ্ছায় বা কোর্টের মাধ্যমে অবসায়ন বা তিন বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকে এবং তিন বছর ধরে স্টক এক্সচেঞ্জের লিষ্টিং ফি পরিশোধ না করে তাহলে ডিএসই চাইলে কোম্পানিকে ডি-লিষ্টিং করতে পারে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উল্লেখিত কোম্পানিগুলো মধ্যে বিডি ওয়েল্ডিং ২০১৪ সালে সর্বশেষ ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করে। সর্বশেষ অর্থবছরের সবকটি প্রান্তিকেই লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। জুন,২০১৮ অর্থবছরে ডিভিডেন্ড দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এছাড়া তিন বছর ধরে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড ২০১৪ সালে সর্বশেষ ১৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করে। সরকারি এই কোম্পানিটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। ১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিডি সার্ভিসেস লিমিটেড।

বেক্সিমকো সিনথেটিকস কোম্পানিটি বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৩ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

দুলামিয়া কটন কোম্পানিটি বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৮৯ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। আইসিবি ইসলামী ব্যাংক কোম্পানিটি বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯০ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

ইমাম বাটন বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ২০০২ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

জুট স্পিনার্স সর্বশেষ ২০১২ সালে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এরপর থেকে উৎপাদন বন্ধের কারণে কোম্পানিটি আর কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। ১৯৮৪ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ২০০১ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

মেঘনা পেট বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ২০০১ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সমতা লেদার বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৮ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

সাভার রিফ্যাক্টরীজ বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৮৮ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শ্যামপুর সুগার বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৬ সালে সরকারি এই কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

সোনারগাঁও টেক্সটাইল বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৯৫ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শাইনপুকুর সিরামিকস বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ২০০৮ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

জিলবাংলা সুগার মিলস বিগত ৫ বছর ধরে কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ১৯৮৮ সালে সরকারি এই কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।