DSEদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি টানা ৫ বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া জেড ক্যাটাগরির পাঁচ কোম্পানি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের(ডিএসই) পরিচালনা পরিষদ। কোম্পানিগুলো হচ্ছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, শাহিনপুকুর সিরামিক, সমতা লেদার কমপ্লেক্স এবং সোনারগাঁও টেক্সটাইল লিমিটেড। বুধবার (২৯ আগস্ট) ডিএসই’র নিয়মিত সভায় এই নির্দেশ দেওয়া হয় ডিএসই’র সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।

সভায় বলা হয়, গত ৭ আগস্ট তালিকাচ্যুতির লক্ষ্যে জেড ক্যাটাগরির ১৫টি কোম্পানিকে উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি টানা ৫ বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়াসহ কোম্পানির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অবস্থা জানাতে শোকজ করে ডিএসই।

এরমধ্যে এই পাঁচ কোম্পানি শোকজের জবাব দিয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোর সার্বিক সঠিক তথ্য জানতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে কোম্পানির বাস্তব অবস্থান জেনে ডিএসই’র পরিচালনা পরিষদকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিএসইর পরিচালক মিনজাহ মান্নান ইমন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শোকজ করা ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ৫টি কোম্পানি পরিদর্শন করা অনুমতি দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। পাশাপাশি যে ১০টি কোম্পানি এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি, বরং সময় চেয়েছে, তাদের জন্য একটি নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, জুট স্পিনার্স, ইমাম বাটন, বেক্সিমকো সিনথেটিক্স, সাভার রিফ্রেক্টরিজ, দুলামিয়া কটন, শাহিনপুকুর সিরামিক, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, শ্যামপুর সুগার মিলস, জিল বাংলা সুগার মিলস, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ), সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও ইনফরমেশন নেটওয়ার্কস লিমিটেডকে টানা ৫ বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে দুই দফা চিঠি দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

ডিএসই বলছে, কোম্পানিগুলো নিয়মিত লভ্যাংশ বিতরণ ও বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করছে না। ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হচ্ছেন। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ডিএসইর তালিকাচ্যুত (ডিলিস্টিং) ২০১৫ এর ৫১/১ এর আইন অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৮ জুলাই এ আইনের ক্ষমতাবলে দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিংকে তালিকাচ্যুত (ডিলিস্টিং) করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদনহীন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা খারাপ কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হলে ইনোসেন্ট ইনভেস্টর (নতুন ও অনভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী) বেঁচে যাবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দুর্বল ও খারাপ কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে না থাকলে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ বিনিয়োগকারীর ক্ষতি কম হবে। কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম কমে আসবে, কিছু বিনিয়োগকারীর ক্ষতি হলেও নতুন ও অনভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বেঁচে যাবে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, জাঙ্ক শেয়ারের দাপট যত কমবে, পুঁজিবাজার তত ভালো আচরণ করবে।