DSEদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চীনা মালিকানায় পর পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করছে বিনিয়োগকারীরা। হঠাৎ করে গত কয়েক দিনের লেনদেনের বাড়ারই তার প্রমান মিলে। তাছাড়া বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আগের চেয়ে বাড়ছে। এদিকে আগামি ১২ সেপ্টেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ২৫ বছর পূর্তী উপলক্ষে পুঁজিবাজারে আসবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে বাজারকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে দেখাতে দীর্ঘদিনের ঘুনে ধরা পুঁজিবাজারে স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে কাজ করছে বিএসইসি। পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখা ও বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি আকৃষ্ট করতে ডিএসইর শেয়ারের ওপর ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে।

এটি হলে সব টাকাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার একটি ক্ষেত্র তৈরি হবে। তাতে বাজারে ফ্রেশ ফান্ড আসবে। তারল্য সংকট কিছুটা দূর হবে। পাশাপাশি শতভাগ কর অবকাশও সুবিধা চাওয়া হয়েছে, এটি দেওয়া হলে পুরো টাকা ডিএসইর উন্নয়নে ব্যয় হবে। এ টাকায় ডিএসইতে ডাটা সেন্টার ও ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলম্যান্ট করপোরেশন করা হবে।

কারণ চীনা করসোটিয়াম ৩৭ মিলিয়ন ডলার কারিগরি সহযোগিতায় ব্যবহার হবে। অতএব সার্বিক দিক বিবেচনায় আগামীতে আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা ভালো কিছু দেখায় অপেক্ষায় রয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে কেউ কেউ বলছেন, কিছুদিনের তুলনায় বর্তমান পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে। তবে এটি আরও ভালো হওয়া উচিত। কেননা সূচক বাড়লেও বর্তমান পুঁজিবাজারের টার্নওভার প্রত্যাশিত অবস্থায় নেই এবং বেশ কয়েকদিন যাবৎ বাজারে লেনদেন এমনটা দেখা যাচ্ছে। বাজারের কোনো কিছুই একই ধারাবাহিকতায় আসছে না।

পুঁজিবাজারের ট্রেড ভলিউম যার ওপর বাজারের গতিশীলতা নির্ভর করে, তা এখনও আশাব্যঞ্জক হয়নি। তবে জুন ক্লোজিংয়ের শেয়ারগুলো ভালো ইপিএস ঘোষণা করেছে। আর ব্যাংক খাতের সবার না হলেও অধিকাংশরই ইপিএস ভালো ছিল। এতে হয়ত এ খাতের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কিছুটা ফিরেছে। মূলত দুর্বল কোম্পানির দৌরাত্ম্য কমে যাওয়ায় ব্যাংক খাতে ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে এ খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস দেশের পুঁজিবাজারে গত দিনের (৫ সেপ্টেম্বর) মতোই সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন। নতুন মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টম্বর) সূচক ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে দিনভর। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ৪০ পয়েন্ট।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ৪ সেপ্টম্বর (মঙ্গলবার) ডিএসইর শেয়ার হস্তান্তরের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার সূচকের উত্থান হয়েছে। এদিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

পাশাপাশি প্রকৌশল বস্ত্র এবং বিমা খাতে সূচকের মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। ফলে এসব কোম্পানির সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন ও শেয়ারের দাম। তবে এর আগে টানা চার কার্যদিবস দরপতন ঘটে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোটিয়াম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মালিকায় আসার পর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার এ বাজারে ২০ কোটি ১ লাখ ৫ হাজার ৫১৭টি শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। এতে লেনদেন হয়েছে ৮১৭ কোটি ২৪ লাখ ১১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয় ৮১১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। তার আগের দিন (৪ সেপ্টেম্বর) লেনদেন হয় ৭১৬ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৫৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ইনডেক্স ১ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ২৭৮ পয়েন্টে। আর ডিএস-৩০ ইনডেক্স ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫৮ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৬টির, কমেছে ১৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির শেয়ার। অপর বাজার সিএসইতে সার্বিক সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৪২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

বাজারটিতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১১টির, কমেছে ১০২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির শেয়ার। লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ৯৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয় ৩৩ কোটি ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার আগের দিন (৪ সেপ্টেম্বর) লেনদেন হয় ২৬ কোটি ৩১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।