bsec foradদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের সব কিছু নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রনে থাকে না। বিএসইসি প্রতিষ্ঠা সত্ত্বেও ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের পুঁজিবাজারে ধ্বস হয়েছে। এতে বিএসইসির ভূমিকা কি ছিল এবং দায়িত্ব পালনে কতটুকু ব্যর্থ বা স্বার্থক হয়েছে সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেছেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ।

পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিকে আনতে অনেক প্রণোদনা থাকলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে হাতছাড়া হয়ে যাবে–এমন ভ্রান্ত ধারণা অনেক উদ্যোক্তার মধ্যে রয়েছে। যে কারণে তারা কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে চায় না। এছাড়া বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের মুখোমুখি হওয়া, নিয়মিত রিপোর্ট জমা দেওয়া, প্রশ্নবান থেকে নিজেদের দূরে রাখতে অনেকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি হতে চায় না।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রজতজয়ন্তী উৎযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহি পরিচালক ফরহাদ আহমেদ এসব কথা বলেছেন।

Page-01 (3)ফরহাদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ভালো কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে অনেক প্রণোদনা রয়েছে। এই বাজারে তালিকাভুক্ত হলে ১০ শতাংশ কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া যায়। যা বিশ্বের অনেক দেশেই নেই। তারপরেও অনেক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় না। এর পেছনে রয়েছে উদ্যোক্তাদের ভ্রান্ত ধারনা।

তিনি বলেন, বিএসইসি ডিসক্লোজার ভিত্তিক প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়ে থাকে। যাতে সরজমিনে কোম্পানির বিস্তারিত দেখা হয় না। তাই ভবিষ্যতে কোম্পানিটি কেমন হবে, তা বলা সম্ভব হয় না।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব দেশের শেয়ারবাজারেই ধস নেমেছে। সেটা আমেরিকার মতো দেশেও। ওইসব দেশে অনেক আগে ধস নেমেছে। আর তাদের তুলনায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজার যেহেতু নতুন, সেহেতু ধস নেমেছে পরে। এছাড়া বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের কোম্পানিগুলো ছোট। যাতে সহজেই প্রভাব ফেলা যায়। আর রিটেইল ইনভেস্টর নির্ভর শেয়ারবাজার হওয়াও একটা সমস্যা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নির্ভর হলে, এ সমস্যা লাঘব হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে নিকট ভবিষ্যতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে মনে করেন ফরহাদ আহমেদ। এ বাজারের উন্নয়নে বিএসইসি ডেরিভেটিভ মার্কেট, বন্ড মার্কেট ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছে বলে যোগ করেন তিনি।

বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার নামক অস্ত্রের অভাবে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস সম্ভব হয়েছে। তবে সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার ২০১২ সালে বিএসইসিতে ইনস্টল করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেও ইনস্টল করা হয়েছে। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি ইসলামী বন্ড নিয়ে কাজ করছে বলে যোগ করেন তিনি।

সাফল্য বা ব্যর্থতা নিয়ে খুব একটা কিছু বলার নেই। কর্পোরেট সেক্টর নতুন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে নতুন। এর সঙ্গে আমাদের হাতে তখন ক্ষমতা ছিল না, তখন সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার ছিল না বলে যোগ করেন নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া ডেরিভেটিভ রুলস, ইসলামি বন্ড এবং বন্ড মার্কেট নিয়ে কাজ করছে বিএসইসি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম।