pm hasina sharebazarদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সর্ম্পকে ভালো করে জেনেশুনে বিনিয়োগ করবেন। খুব বেশি লোভে পড়বেন না। কারণ প্রতিটি ব্যবসায় লাভের একটা সীমা আছে। তিনি বলেন, আপনারা না জেনে বুঝে বিনিয়োগ করে ধরা খান আর দোষ হয় সরকারের।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রজত জয়ন্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল। প্রতিনিয়ত এ বাজারের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। আমরাও এ বাজারকে সহায়তা দিচ্ছি। কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করছি। শেয়ার বাজারের লেনদেন ও কারচুপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখন আর বিদেশিদের ওপর নির্ভর করতে হয় না। এখন আমরা নব্বই ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বাজেট করি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। ৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেন নিয়েছে। এর মধ্যে শেয়ারবাজারের লেনদেন কারচুপি ও অনিয়ম সনাক্তকরণে যথাযথ নিয়ন্ত্রকমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের সকল বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে, আর্থিক প্রতিবেনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাস যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রির্পোটিং কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অর্থনিটি ইনভেস্টমেন্ট রুলস ২০১৫ এর মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অব প্রাইভেট ইক্যুইটিতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে বিএসইসি পেয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরির সম্মান ও বৈদেশিক বিনিয়োগ। ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের আমাদের বাজারের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে সমঝোতা স্বারক সাক্ষর হয়েছে। চীনের কনসোর্টিয়াম ইতিমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এ অন্তর্ভূক্তিতে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকলে উপকৃত হবেন।

বিএসইসির কর্মকর্তাদের উদ্দ্যেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের পদমর্যাদা, বেতন ও ভাতাদিসহ অন্যান্য সুবিধা বাংলাদেশ ব্যাংকের সমমানের করে দিয়েছি। কমিশনের জন্য জনবল বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছি। কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণের লক্ষে আইনে বিধান রাখা হয়েছে। কমিশনে কর্মরত সকলের জন্য দেশে বিদেশে আরো উন্নততর প্রশিক্ষণ যাতে হয় সে ব্যবস্থা করেছি। এ জন্য বিভিন্ন সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজনও করা হচ্ছে। যাতে করে কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সকল তথ্য সংগ্রহ করে নিবেন। প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালোভাবে ও বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন। কারণ কোথায় আপনি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত কি। এ ব্যাপারে জেনে শুনে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগ করে আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হোন সেটা আমি চাই না। তিনি আরো বলেন, খুব বেশি লোভে না পড়ে সীমা রেখেই পা ফেলতে হবে। তাহলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

ভবিষ্যত পুঁজিবাজারের উন্নয়নের কথা উল্লেখ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ভবিষ্যত পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সর্বাত্মত সহযোগিতা প্রদান করেব। পুঁজিবাজার হবে ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মাণের দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের এক নির্ভরযোগ্য উৎস।