gspদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) যা পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে শুল্কমুক্ত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা আবারো প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সুবিধা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সাধারণত বিদেশি ক্রেতারা জিএসপি সুবিধাযুক্ত দেশ থেকেই পোশাক কিনতে পছন্দ করেন।

গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড কোঅপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা)-র চতুর্থ বৈঠকে বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের প্রতি উদ্বেগ জানিয়ে তাদের এ অবস্থান জানায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন উপবাণিজ্য প্রতিনিধি মার্ক লিনোট ও বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বোস। তার নেতৃত্বে বৈঠকে বাংলাদেশের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

টিকফা বৈঠকে দুপক্ষ থেকেই পারস্পরিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নের কথা জোর দিয়ে বলা হয়। তবে, বাংলাদেশের জিএসপি নিয়ে তাদের অবস্থানের পরিবর্তনের কোনো আভাস দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়সহ সামগ্রিক শ্রম সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। তবে দুপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির আরও অগ্রগতি হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জিএসপি সুবিধা থাকলে যে দেশে পোশাক যাবে, সে দেশে কোনো প্রকার ভ্যাট বা ট্যাক্স দিতে হয় না। মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ সুবিধা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সাধারণত বিদেশি ক্রেতারা জিএসপি সুবিধাযুক্ত দেশ থেকেই পোশাক কিনতে পছন্দ করেন। উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এরপর থেকে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে, ওই বছরেরই নভেম্বরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে টিকফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টিকফা চুক্তি বাস্তবায়নসহ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের সম্প্রসারণ এবং মিনিস্ট্রিয়াল সিদ্ধান্তের আলোকে ডিউটি-ফ্রি বাজারের সুবিধা প্রদানের কথা বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি দূতাবাসের মুখপাত্র শামিম আহমাদ এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের নার্স ও ধাত্রীদের অন্যান্য সেবামূলক খাতে অংশগ্রহণ করার প্রক্রিয়া সহজ করার আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। অপরদিকে, মার্কিন কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা করেছে। তারা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষা, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও ডিজিটাল অর্থনীতি তৈরির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন বলে বাংলাদেশি দূতাবাস সূত্রে জানা হয়েছে।