Fu-Wang-foodদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফুয়াং সিরামিকের স্পন্সর ডাইরেক্টরদের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের (পেইড আপ ক্যাপিটালের) যৌথভাবে ৩০ শতাংশ এবং ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ হারে শেয়ার রাখার নির্দেশনা দিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রিটকারীর আইনজীবী নূর নবী বুলবুল সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি ড. কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আইনজীবী নূর নবী বুলবুল জানান, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আইনে নির্ধারিত পরিমাণ শেয়ার ফুয়াংসিরামিকের স্পন্সর ডাইরেক্টরদের নেই। এ কারণে ইস্কান্দার ভুঁইয়া নামক একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী স্পন্সর ডাইরেক্টরদের প্রতি বিএসইসির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

জারি করা রুলে ফুয়াংসিরামিকের স্পন্সর ডাইরেক্টরদের কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের যৌথভাবে ৩০ শতাংশ এবং ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ হারে শেয়ার রাখার নির্দেশনা দিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের প্রতি কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে, এই পরিমাণ শেয়ার না থাকার কারণে যেসব স্পন্সর ডাইরেক্টরদের পদ শুন্য হবে তাদের স্থলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যাদের ৫ শতাংশ বা তার ওপরে শেয়ার আছে তাদের স্পন্সর ডাইরেক্টর নিয়োগ দিতে ফুয়াং সিরামিকসের ব্যববস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশনা দিতে বিএসইসির চেয়ারম্যানের প্রতি কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের রেজিস্ট্রার, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট , চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট, ফুয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোম্পানিটির পাঁচজন পরিচালককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে ২০১১ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেকোনো স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্পন্সর ডাইরেক্টরদের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের যৌথভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ এবং প্রত্যেক স্পন্সর ডাইরেক্টরদের ব্যক্তিগতভাবে দুই শতাংশ হারে শেয়ার থাকতে হবে।

যৌথভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকলে ওই পরিমাণ শেয়ার পূরণ না হওয়া পর্যন্ত স্পন্সর ডাইরেক্টররা কোনো শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবে না এবং ওই কোম্পানি কোনো রাইটস শেয়ার ঘোষণা কিংবা পুণরায় জনগণের কাছ থেকে নিয়ে মূলধন বৃদ্ধি করতে পারবে না। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ শেয়ার না থাকলে তাদের ডাইরেক্টরশিপ শূন্য হয়ে যাবে।

এ ধরণের শূন্যতার সৃষ্টি হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যাদের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে, পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তাদের মধ্য থেকে ডাইরেক্টর নিয়োগ দিতে হবে। আইনজীবী নূরনবী জানান, আইনের এই বিধান থাকার পরও ফুয়াং সিরামিকসের পাঁচজন স্পন্সর ডাইরেক্টরের মধ্যে অন্তত চারজনের ব্যক্তিগতভাবে দুই শতাংশ হারে শেয়ার নেই।

এ ছাড়া যৌথভাবেও ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই। এ কারণে রিটটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। এর আগে ফুয়াং ফুড নিয়েও একই কারণে রিট হয়। যে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং রুলের ওপর পরবর্তীতে চূড়ান্ত শুনানি হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর ওই রিটের ওপর রায় দেবেন হাইকোট।