enginer lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে প্রকৌশলী খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ডিভিডেন্ড ঘোষনাকে সামনে রেখে প্রকৌশলী খাতের শেয়ারের প্রতি একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক বছর সম্পন্ন হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দর পতনে একেবারে তলানিতে নেমে এসেছিল প্রকৌশলী খাতের কিছু শেয়ার। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি সঞ্চিত হচ্ছিল এ খাতের শেয়ারে। অন্যদিকে সরকার পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রকৌশলী খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ শুরু করছেন। এছাড়া সামনে ডিভিডেন্ড মৌসুম। তাই বিনিয়োগকারীরা ভাল ডিভিডেন্ডের আসায় নতুন করে ঝুঁকছেন।

এদিকে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের মৌসুম চলছে। ফলে এসব খাতের শেয়ারের কদর বাড়ছে। তবে সর্বশেষ দেয়া লভ্যাংশে প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর প্রকৃত প্রাপ্তি (ডিভিডেন্ড ইল্ড) খুবই সামান্য। যা আমানতের সুদের হারের চেয়ে অনেক নিচে। দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের পর্যালোচনায় এমনটিই জানা গেছে।

একটি কোম্পানির যে পরিমাণ লভ্যাংশ দেয় তা থেকে বিনিয়োগকারীর প্রকৃত প্রাপ্তি নির্ভর করে তার ইল্ডের ওপর।কারণ বাজারে শেয়ারের দাম বেশি হলে এবং লভ্যাংশ বেশি দিলেও প্রকৃত প্রাপ্তি কম হয়। অন্যদিকে তুলনামূলক কম লভ্যাংশ দিলেও প্রাপ্তি ভালো হতে পারে যদি শেয়ারের দাম কম হয়। তাই ঘোষিত লভ্যাংশের হার প্রকৃত বিবেচ্য নয়,বিবেচ্য হয় শেয়ারের বাজারমূল্যের নিরিখে শতকরা কত লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে তা। প্রকৃত প্রাপ্তি বুঝা যায়, ডিভিডেন্ড ইল্ডের মাধ্যমে। কোনো কোম্পানির লভ্যাংশকে শেয়ারের সর্বশেষ বাজার দর দিয়ে ভাগ করে ১০০ দিয়ে গুন করলে ডিভিডেন্ড ইল্ড পাওয়া যায়।

তথ্যমতে, ডিএসইতে প্রকৌশল খাতের ৩৬ টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে অধিকাংশ কোম্পানি সর্বশেষ হিসাব বছরে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। যেসব কোম্পানি নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সেগুলোর মধ্যেও প্রকৃত প্রাপ্তি ছিল অনেক কম। কোম্পানিগুলোর মধ্যে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ১৭ টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি ছিল (ডিভিডেন্ড ইল্ড) সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের লভ্যাংশে।কোম্পানিটি গেলো হিসাব বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।এর প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ৫ দশমিক ১২ শতাংশ।

প্রকৃত মুনাফার দিক দিয়ে প্রকৌশল খাতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিএসআরএম স্টীল। কোম্পানিটি ২০১৭ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। প্রকৃত মুনাফার দিক দিয়েছে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টীলস লিমিটেড। কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে আফতাব অটোমোবাইলস। এর প্রকৃত মুনাফা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ।

নগদ লভ্যাংশ দেয়া অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে নাভানা সিএনজির প্রকৃত মুনাফা ছিল ২ দশমিক শূণ্য ৭ শতাংশ, রংপুর ফাউন্ড্রির প্রত্যেকের ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ করে, বিডি ল্যাম্পসের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ইফাদ অটোসের ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ, জিপিএইচ ইস্পাতের ১ দশমিক ১৩ শতাংশ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের দশমিক ৭৭ শতাংশ, বিএসআরএম এবং ইস্টার্ন ক্যাবলসের প্রত্যেকের দশমিক ৭৪ শতাংশ করে, আরএসআরএম স্টীলের দশমিক ৬১ শতাংশ, রেইনউইক যজ্ঞেশ্বরের দশমিক ২০ শতাংশ এবং এটলাস বাংলাদেশের দশমিক ১৬ শতাংশ প্রকৃত মুনাফা হয়েছে।