pmজয়নাল আবেদিন, দেশ প্রতিক্ষণ, শিবচর: আ’লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,  যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, যারা এতিমের টাকা মেরে খায় আজ তাদের সঙ্গে ঐক্য করেছেন সেই কামাল হোসেন গং। তিনি নেতা মেনেছেন এমন একজনকে যিনি পলাতক, মানি লন্ডারিংয়ে সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির সেই পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অধীনেই ড. কামাল হোসেন গং ঐক্য করেছেন, আরও কিছু খুচরা আধুলি…। মুখে নীতি কথা বলেন, অথচ নীতিবানরাই খুনি ও দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ঐক্য করেছে।

ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও শিবচরের জনগণকে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়, ক্ষমতার ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। দেশের মানুষ পেট ভরে খেতে পারে, লেখাপড়া করতে পারে, বিনামূল্যে ওষুধ পায়। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আপনারা যাতে ভালো থাকতে পারেন, দেশের মানুষ যেন ভালো থাকে এটাই মূল লক্ষ্য। রোববার শরীয়তপুরের শিবচরে আয়োজিত জনসভায় তিনি একথা বলেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শামসুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, নূরে আলম চৌধুরী লিটন প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, জীবনে দুর্নীতি করিনি। কেউ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। খালেদা জিয়া এটাও বলেছিলেন, এ সরকারের আমলে আর পদ্মা সেতু হবে না। জোট সরকার পদ্মা সেতুর কাজ কিছুই করেনি। দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক সে সময় ৭টি প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। দেশবাসীসহ বিশ্ব দেখছে আমরাই পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। সব ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করেই সেতু নির্মাণ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পৌনে ১০ বছরে দেশের মানুষ উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বের ৫টি দেশের একটি বাংলাদেশ। দেশজ উৎপাদন হিসেবে বিশ্বের ৪৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যাত্রা শুরু করেছি। দেশের অর্থনীতি এখন প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকারও বেশি। উন্নয়নের ৯০ ভাগ কাজই নিজস্ব অর্থায়নে করছি।

এবার প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৫.৪০ শতাংশ। মাথাপিছু আয় ২০০৫-০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৭৫১ ডলার। দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১.৫ শতাংশ থেকে এখন ২১.৮ শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশ। প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান। ৫ কোটি মানুষ মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে উন্নীত। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াট। ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ১২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায়।

শেখ হাসিনা বলেন, বয়স্ক-ভাতাভোগীর সংখ্যা ৩৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪০ লাখ করা হয়েছে। স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুস্থ মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১২.৬৫ লাখ থেকে বেড়ে ১৪ লাখ। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ২৫ হাজার থেকে বেড়ে ১০ লাখ।

তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি হলো হত্যা, খুন আর ষড়যন্ত্র। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১-এ বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়। প্রধানমন্ত্রী হয়েও কালো টাকা সাদা করেছিলেন। আজ যে ড. কামালের সঙ্গে বিএনপির ঐক্য হয়েছে তা মিলের কারণেই হয়েছে। কারণ ড. কামালও কালো টাকা সাদা করেছিলেন।