aiub buccuদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: এই রুপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাব দূরে বহুদূরে/সেদিন চোখে অশ্রু তুমি রেখো গোপন করে। নিজের গাওয়া এই গানের কথাগুলোকে সত্য প্রমাণ করে চিরতরে চলে গেলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু । বৃহস্পতিবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন।

বেলা সাড়ে এগারটায় ড. মির্জা নাজিম উদ্দিন স্কয়ার হাসপাতালে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮ আইয়ুব বাচ্চুকে তার বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ড্রাইভার আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থাতেই পাই। তারপরও ১৫ থেকে ২০ মিনিটি চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। পরে ৯ টা ৫৫ মিনিটে তাকে আমরা মৃত ঘোষণা করি।’

ড. মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, তিনি বহুদিন হৃদরোগে ভুগছিলেন। ২ সপ্তাহ আগেও তিনি চেকআপ করিয়ে গেছেন। এর আগে ২০০৯ সালে তার হার্টে রিং পড়ানো হয়। আর ২০১২ সালে ফুসফুসে পানি জমার কারণে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে হয়েছিল আইয়ুব বাচ্চুকে।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন এলআরবি ব্যান্ডের জনপ্রিয় এই ভোকাল। সংগীত জীবনের দীর্ঘ চার দশকে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়েছেন। ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীতজগতে প্রবেশ করেন আইয়ুব বাচ্চু। শ্রোতা-ভক্তদের কাছে এবি নামেও পরিচিত তিনি। মূলত রক ঘরানার কণ্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান ও লোকগীতি দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি।

১৯৯১ সালে তার নেতৃত্বে জন্ম নেয় ‘এলআরবি’ ব্যান্ড। দলটির লিড গিটারিস্ট ও ভোকালও তিনি। এর আগে তিনি প্রায় দশ বছর সোলস ব্যান্ডের সঙ্গে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন।

গিটারে সারা ভারতীয় উপমহাদেশে আইয়ুব বাচ্চু বিখ্যাত। জিমি হেন্ড্রিক্স এবং জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুনভাবে অণুপ্রাণিত। আইয়ুব বাচ্চুর নিজের একটি স্টুডিও আছে। ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত এই মিউজিক স্টুডিওটির নাম এবি কিচেন।

২০১০ সালে ঈদের জন্য নির্মিত ‘ট্রাফিক সিগন্যাল’ ও ‘হলুদ বাতি’ শিরোনামের দুটি নাটকেও অভিনয় করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। প্রসঙ্গত, অক্টোবরের ১৬ তারিখেও রংপুরে একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।