pm-songlapদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে সাত দফা দাবি জানিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি, অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি. চৌধুরী) নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের জন্য শুক্রবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ দিকে গণভবনে যান। সেখানে বৈঠকে যুক্তফ্রন্টের নেতারা এসব দাবি তুলে ধরেন।

এই জোটের দাবিগুলো নিম্নরূপ-
১. নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সম্ভব না হলে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। এজন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

২. নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীনস্থ করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনও প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে। গ) সরকারি দলের প্রার্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ করতে হবে।

৩. নির্বাচনকালীন সরকার চাই। জাতীয় সরকার গঠন: প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। অথবা মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা জোট থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েও একটি সন্তোষজনক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ ক্ষমতা সীমিত করতে হবে।

৪. আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আমাদের জন্য গর্বের। তারা বিভিন্ন দেশে নির্বাচনকালীন সহিংসতা রোধ ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ সুনামের সঙ্গে করে আসছে। সুতরাং নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে-সেহেতু আমাদের প্রস্তাব,
ক. সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এবং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত মোতায়েন করতে হবে।
খ. নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনীকে সীমিত ক্ষমতা দিতে হবে যেমন, আটক রাখার ক্ষমতা ও তাদের ভোট কেন্দ্রে থাকতে দিতে হবে। যাতে করে ভোটের দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয় এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।

৫. ইভিএম: আধুনিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক নির্বাচনে আমাদের অনেক আগ্রহ আছে, কিন্তু ইভিএম সম্পর্কিত যেসব প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জন প্রয়োজন তা আমাদের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথেষ্ট নেই। সেজন্য এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না বলে আমরা মনে করি।

৬. নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।

৭. নির্বাচন সম্পর্কিত মামলা নির্বাচনের পর এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন অতি সত্বর প্রণয়ন করতে হবে।

যুক্তফ্রন্টের সাত দফা সংলাপে অংশ নেওয়া প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ,দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা, বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ,

বিএলডিপি সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ এর সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, বাংলাদেশ জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান,

বিকল্পধারা বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাহবুব আলী, বাংলাদেশ জন দলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার দাস, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নির্বাহী সদস্য, সাবেক এমপি, মজহারুল হক শাহ্ চৌধুরী এবং এনডিপি মহাসচিব মো. মাযহারুল হোসেইন ঈসা।