Glaxo--দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের (জিএসকে) কারখানা বন্ধের বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। কোম্পানিটি বরাবরই ইর্ষণীয় মুনাফায় ছিল। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির প্রায় ৪০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা মুনাফা ছিল। বছরের প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত এ কোম্পানির নিট মুনাফা ছিল ১৮ কোটি টাকারও বেশি।

তৃতীয় প্রান্তিকে এসে বড় ধরনের লোকসান করার বিষয়ে কোম্পানিটি জানিয়েছে, কারখানা বন্ধের পর কর্মীদের পাওনা (সার্ভিস বেনিফিট) এবং অবিক্রীত ওষুধ অবচয় হিসেবে ধরে নেওয়ার কারণেই শেয়ারপ্রতি ৪৮ টাকা লোকসান হয়েছে। সংশ্নিষ্টরা আরও জানান, তবে এ প্রভাব সাময়িক।

এর পরও লোকসানের খবরে সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার শেয়ারটির দর ৩০ টাকা বা পৌনে ৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৭০ টাকায় নেমেছে। এর আগে গত ২২ জুলাই হঠাৎ করে ওষুধ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেয় ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে প্রতিষ্ঠিত গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন কর্তৃপক্ষ।

এরপর ২৭ জুলাই কোম্পানির চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বাংলাদেশে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ব্যবসার ৭০ শতাংশই কনজুমার হেলথ কেয়ারের। বাকি ৩০ শতাংশ ফার্মাসিউটিক্যালের। ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের বাণিজ্যিক কর্যক্রম বন্ধ করা হলেও গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের কনজুমার হেলথ কেয়ারের কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।

Page-01 (45)তিনি জানান, আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট লোকসানজনক। সব ইউনিট মিলে আমাদের যে মুনাফা হয়, কনজুমার হেলথ কেয়ারে মুনাফার পরিমাণ তার থেকেও বেশি। কনজুমার হেলথ কেয়ারের মুনাফা থেকে ফার্মাসিউটিক্যালের লোকসান বাদ দিয়ে মোট মুনাফা দেখানো হয়। সে হিসাবে ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ করে দেয়া হলেও সামনে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের মুনাফা বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।

গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের চেয়ারম্যানের ওই ঘোষণার পর চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনই প্রথম প্রকাশ করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) এ আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, মুনাফা তো দূরের কথা উল্টো লোকসানেরর কবলে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান করেছে ৪৮ টাকা ৬৪ পয়সা।

আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয় ২০ টাকা ৫০ পয়সা। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের মোটা অঙ্কের লোকসানের প্রভাব কোম্পানিটির চলতি বছরের প্রথম নয় মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) হিসাবেও পড়েছে। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই নয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান করেছে ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে মুনাফা করেছিল ৩৯ টাকা ৭৮ পয়সা।