komol viদেশ প্রতিক্ষণ, কক্সবাজার: চলতি সরকারের সময়ে কক্সবাজারে চলছে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প রেললাইন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্টজোনসহ চলছে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। এসব বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি।

বর্তমানে এসব কারণ আর আগে থেকেই পর্যটন স্পট ও জেলা সদর আসন হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ আসনটি ভিআইপি আসন হিসেবে গণ্য। তাই এ আসনে মনোনয়ন পেতে সব দল থেকেই প্রতিযোগিতা চলছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যে যার মতো মাঠ-ঘাট চষে বেড়ানোর পাশাপাশি কেন্দ্রেও লবিং চালাচ্ছেন।

এসব কারণে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব জোটের শরীক দলে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রার্থিতা নিয়ে মাঠে-ঘাটে রয়েছেন। ক্ষমতাশীন দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী আওয়ামী লীগে। রয়েছে জাতীয় পার্টি, বিএনপি, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতসহ নানা দলের প্রার্থী। তারা জনসর্মথনে জয় নিয়ে পর্যটন শহরে নিজ দলের আধিপত্য জানান দিতে প্রস্তুত।

komolকক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র মতে, কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন এবং রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়েই কক্সবাজার-৩ আসনটি গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৬ জন। সদর উপজেলায় ১০৮টি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে এক লাখ ৩৫ হাজার ১৪ জন পুরুষ ও এক লাখ ২১ হাজার ৪ জন নারী মিলিয়ে ভোটার রয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার ১৮ জন। আর রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৬১ ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ৮১ হাজার ৪১০ জন পুরুষ ও ৭৬ হাজার ৬০৮ নারীসহ ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫৮ হাজার ১৮ জন।

তবে, রাজনৈতিক বোদ্ধামহলের মতে, কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা ১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকে বরাবরই বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর বিএনপি সারাদেশের মতো কক্সবাজারেও প্রত্যন্তাঞ্চলে নিজেদের সমর্থন বাড়ায়। আর দীর্ঘ বছর তারা ক্ষমতায় থাকার কারণে এখানে সাংগঠনিকভাবে অবস্থান শক্ত করে।

১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে টানা তিনবার এ আসনে নির্বাচিত হয়ে জয়ের সুফল ঘরে তুলেছিলেন বিএনপির প্রার্থীরা। এ কারণে এখনও তাদের প্রার্থিতা সুসংহত বলে দাবি করা হলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাঠে আসার পর বিএনপিতেও মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা। আর বর্তমান ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগেতো একাধিক প্রার্থী মাঠেই রয়েছে।

কক্সবাজার-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে সাধারন ভোটারদের জরিপে সাইমুম সারওয়ার কমল সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। আওয়ামীলীগ দলীয় হাইকমান্ড, কোর-কমিটি এবং মনোনয়ন বোর্ডে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের সাথেই কমলের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সম্পর্কের কারনে নৌকার মনোয়ন বিষয়ে কক্সবাজার-৩ আসনে কমলের সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি বলে আপাতত অনুমান করা হচ্ছে। তবে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলীয় সভানেত্রী উনার সাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে জানাবেন।

কক্সবাজার ৩ সদ্যবিদায়ী সাংসদ সাইমুম সারওয়ার কমল ১০ নভেম্বর ২০১৮ ইং বিকেলে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর কার্যালয় হতে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেন| এ সময় কমলের সাথে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার স্থানীয় আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিবৃন্দ, ঢাকাস্থ রামু সমিতি প্রতিনিধিবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নেতৃত্বস্থানীয় প্রতিনিধি সহ ঢাকাস্থ সরকারী/বেসরকারী পেশাজীবী ও চাকুরিজীবী।

কক্সবাজার-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকাস্থ রামু সমিতির সদস্য আকতার হোসেন বলেন, “আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেনীর প্রয়োজনে এবং বিপদে আমরা সবসময় কমল ভাইকে পাশে পেয়েছি। এম পি হিসেবে কমল ভাই সবচেয়ে জনবান্ধব।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কক্সবাজার ছাত্র পরিষদের একজন সদস্য বলেন, কমল ভাই সম্পর্কে কিছুসংখ্যক নেতা বিরোপ প্রতিক্রিয়া দেখালেও আপনারা গ্রামের সাধারন জনগনকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন কমল সাহেব প্রতিটি দূর্যোগকালীন মুহুর্তে অসহায় মানুষের পাশে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিরক্ষরতা দূরীকরণে কমল সাহেবের পদক্ষেপ কক্সবাজারে নজির সৃষ্টি করেছে। কক্সবাজার-৩ আসনের উন্নয়নে সাংসদ হিসেবে কমল সাহেবের বিকল্প চিন্তা করাটা হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত হবে।”

রামু উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন মুন্না জানান,” কমল ভাই আজীবন নিজের বৈধ ব্যবসা থেকে আয় করা টাকা সাধারন অসহায় মানুষের কল্যানে এবং প্রয়োজনে খরচ করেছেন। শিক্ষার বিস্তারে কমল ভাই যে নজির সৃষ্টি করেছেন তার সুফল রামুবাসীর ভবিষ্যত প্রজন্ম আজীবন ভোগ করবে। নৌকার প্রার্থী ও আমাদের সাংসদ হিসেবে আমরা কমল ভাইকে সবসময় আমাদের পাশে চাই।”

কমলের বিষয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত সাবেক এক ছাত্রনেতা তার ফেইসবুকে লিখেছেন, তিনি কমল শুধুমাত্র কিছুসংখ্যক পদধারীদের নেতা নন, তিনি তৃনমুলের মুজিববাদীদের, অসহায় গরীব, মেহনতির, পেশাজীবিদের, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের­ ও উদ্যোক্তাদের নেতা।