dse dorpotonদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন মন্দাদশা অব্যাহত রয়েছে। মন্দার কবলে পড়ে কমে গেছে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। এরই ধারাবাহিকতায় অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে বিভিন্ন খাতের বিশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। একসময় বাজারে এসব শেয়ারের দর এবং চাহিদা থাকলেও মন্দায় সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বর্তমানে এসব শেয়ার মিলছে ১০ টাকার কমে। এই তালিকায় রয়েছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র, বিমা, ওষুধ ও রসায়ন এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি।

মন্দাভাবের কারণে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর তলানিতে নেমে গেছে। এর মধ্যে অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে গেছে ২৮ কোম্পানির শেয়ার দর। কোম্পানিগুলোর মধ্যে কিছু কোম্পানির মুনাফায় নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দিলেও বেশিরভার কোম্পানির মুনাফা তেমন মন্দ নয়। তারপরও কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ক্রমাগত নিচের দিকেই নামছে।

ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করা আর্থিক খাতের ফারইষ্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ার দর ৪.৯০ টাকা, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের শেয়ার দর ৪.৮০ টাকা, এবং বাংলাদেশ ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা।

ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো সিনথেটিকসের শেয়ার দর ৬.২০ টাকা, গোল্ডেন সনের শেয়ার দর ৭.৯০ টাকা, অলটেক্সের শেয়ার দর ৮.১০ টাকা, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার দর ৬.৩০ টাকা, আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর ৯.৮০ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা, ডেল্টা স্পিনার্সের শেয়ার দর ৬.২০ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৯.৭০ টাকা,

ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার দর ৮.৬০ টাকা, কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার দর ৭.৪০ টাকা, জেনারেশন নেক্সটের শেয়ার দর ৬.৫০ টাকা, জিবিবি পাওয়ারের শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা, মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৮.২০ টাকা, তাল্লু স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৫.৪০ টাকা, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্টের শেয়ার দর ৯.৬০ টাকা এবং এ্যাপোলো ইষ্পাতের শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা।

জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান বলেন, শেয়ারের দর কমে যাওয়ার জন্য বাজার পরিস্থিতি দায়ী। তবে এই পরিস্থিতির জন্য বেশি দায়ী বাজারে ভালো কোম্পানির অভাব। ব্যাংকের লোন সহজলভ্য হওয়ায় পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি আসছে না। তালিকাভুক্ত হচ্ছে দুর্বল কোম্পানি।

কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার পর শেয়ারহোল্ডারদের সন্তোষজনক রিটার্ন দিতে পারছে না, যে কারণে এসব শেয়ারের চাহিদা কমে যাচ্ছে। একসময় দর চলে যাচ্ছে ১০ টাকার নিচে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিকল্প নেই।

এদিকে কোম্পানির শেয়ারদর কমে যাওয়ার জন্য কোম্পানির আর্থিক অবস্থার কথা স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বস্ত্র খাতের একটি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারদর কমে যাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থা যেমন দায়ী, তেমনি এর জন্য বাজার পরিস্থিতিও দায়ী। দীর্ঘদিন তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর নিন্মমুখী রয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে এসব কোম্পানিতে।