DSEদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক গতিকে মন্থর ও অস্থিতিশীল করে তুলছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সাম্প্রতিক সময়ে টানা দরপতনের নেপথ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা জড়িত বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর রশীদ।

এদিকে কারসাজি চক্রের সক্রিয়তায় দেশের পুঁজিবাজারে নিয়মিত পতনের মাত্রা বাড়ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থাও চিন্তিত। বাজারে আস্থার সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। ধারাবাহিক পতনে বাজার বিশেষজ্ঞরা আশঙ্ক করছেন আবারও মহাধ্বসের দিকে যাচ্ছে বাজার। নির্বাচনী সময়ে সূচক ও লেনদেনে মন্দাভাব অব্যাহত রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে ভীতি তৈরি হয়েছে। কোনোভাবেই পতনের লাগাম টানতে পারছে না কোনো সংস্থাই।

এ প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে দরপতনের কোন কারন দেখছি না। আসলে নির্বাচনী সময়ে বাজারে টানা দরপতন ভাল লক্ষণ নয়।

মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক জেগে ঘুমাচ্ছে। অর্থমন্ত্রীও বাংলাদেশ ব্যাংককে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতায় করার জন্য বলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তা করছে না। সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। তারা তাদের সাবসিডিয়ারির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারোও বলে মনে করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের বর্তমান অবস্থা ১৯৯৬ সালের চেয়েও ভয়াবহ। ১৯৯৬ সালের বাজারে ঋণের কোনো বিষয় ছিল না। তখনকার বাজারে বিনিয়োগকারীদের পুরোটাই ছিল তাদের নিজস্ব বিনিয়োগ। তাই তখন যারা শেয়ার নিজের নামে হস্তান্তর করে অপেক্ষা করেছিলেন, তারা দীর্ঘ সময় পর হলেও মুনাফা পেয়েছেন।

কিন্তু এবার টানা দরপতনের কারণে ইতোমধ্যে অনেকেই তাদের নিজস্ব বিনিয়োগের পুরোটাই হারিয়েছেন। এমনকি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ঋণেরও পুরোটাই প্রায় যায় যায় অবস্থা। এ জন্য বিনিয়োগকারীর চেয়ে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোই এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ডিবিএর সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, আর্থিক বাজারেই তারল্য সংকট রয়েছে। ফলে এর প্রভাব পুঁজিবাজারেও লেগেছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক. ড. মিজানুর রহমান বলেন, আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা, কুঋণ এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা (বিশেষ করে ব্যালেন্স সিটের দুর্বল কোয়ালিটি) এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এদিকে পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রতিনিয়তই তাদের পোর্টফোলিওর অবস্থা নাজুক পর্যায়ে চলে এসেছে।