aligদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২১ বিশেষ অঙ্গীকার-সম্বলিত ইশতেহার প্রকাশ করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আগামী ১৮ ডিসেম্বর ইশতেহার প্রকাশ হতে পারে বলে দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপনের পাশাপাশি সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহ পরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হতে পারে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহার উপ-কমিটি সূত্রে জানা যায়, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারের চেয়ে এবারের ইশতেহারের পার্থক্য হবে বিশেষ এই অঙ্গীকার। এতে আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে যে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে সেগুলো ক্রমান্বয়ে সাজানো হয়েছে।

পাশাপাশি ইশতেহারে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আওয়ামী লীগের অতীত শাসনামলের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। ইশতেহারে করা বিশেষ অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে- আমার গ্রাম-আমার শহর, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ, তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর এবং তাদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, নারী ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ, পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল, মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রæত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ়, সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দারিদ্র্য নির্মূল।

সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চয়তা, সার্বিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা, দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন, জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন, বøু-ইকোনমি-সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন, নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা, প্রবীণ কল্যাণ কর্মসূচি, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন।

ইশতেহার সাতটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। যার শুরুতে থাকবে ‘আমাদের অঙ্গীকার’ আর শেষ হবে ‘দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান’ দিয়ে।

অধ্যায়গুলো মধ্যে রয়েছে : পটভূমি, গৌরবোজ্জ্বল পাঁচ বছর (জুন ১৯৯৬-জুলাই ২০০১) স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা পূরণের সুবর্ণ সময়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার : লুণ্ঠন, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমল : গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও উত্তরণ, আওয়ামী লীগ শাসনামল : সংকট উত্তরণ এবং দিন বদলের পথে যাত্রা (জানুয়ারি ২০০৯- ডিসেম্বর ২০১৩),

আওয়ামী লীগ শাসনামল : উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি পথে বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশ (জানুয়ারি ২০১৪-ডিসেম্বর ২০১৮), সরকার পরিচালনার দুই মেয়াদে সাফল্য ও অর্জন এবং আগামী পাঁচ বছরের (২০১৯-২০২৩) লক্ষ্য ও পরিকল্পনা। আর অন্যান্য অধ্যায়ে আরও রয়েছে- গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ; আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা;

দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন; জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গড়ে তোলা; দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক; সামষ্টিক অর্থনীতি : উচ্চ আয়; টেকসই ও আন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন; কৌশল ও পদক্ষেপ; অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প (মেগাপ্রজেক্ট); ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ; তরুণ যুব সমাজ : ‘তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’; দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস; কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি : খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের নিশ্চয়তা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিল্প উন্নয়ন, শ্রমিক কল্যাণ ও শ্রমনীতি, স্থানীয় সরকার : জনগণের ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, যোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণ, সমুদ্র বিজয় : বøু-ইকোনমি : সমুদ্র বিজয়-উন্নয়নের দিগন্ত উন্মোচন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা, শিশুকল্যাণ, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ কল্যাণ, নারীর ক্ষমতায়ন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, ক্ষুদ্র নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অনুন্নত সম্প্রদায়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ,

প্রতিরক্ষা : নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও অষন্ডতা সুরক্ষা, পররাষ্ট্র, এনজিও ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের অর্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। ইশতেহারে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে মুজিববর্ষ পালন : উন্নয়ন অগ্রযাত্রার শপথ গ্রহণ, ২০৩০ সালে এসডিজি বাস্তবায়ন, ব-দ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০, জননেত্রী শেখ হাসিনার সম্মোহনী নেতৃত্বের বিশ্বজনীন স্বীকৃতি ও ভবিষ্যৎ দিকদর্শন। এসব বিষয় নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছেদলটি।