cipদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৭৮ ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি-রফতানি) কার্ড প্রদান করেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর কারওরান বাজার টিসিবি অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইপিদের হাতে কার্ড তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

২০১৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে তাদের এ কার্ড দেয়া হয়। ওই বছরে ১৯টি পণ্যখাতে অবদান রাখা ১৩৭ জন রফতানিকারক এবং পদাধিকারবলে ৪১ জন ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি কার্ড দিয়ে সম্মানিত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য প্রমুখ।

২০১৩ সালের সিআইপি নীতিমালা অনুসারে ২০১৬ সালে মোট ১৮টি খাতের ব্যবসায়ীদের কার্ড প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, কাঁচাপাট, পাটজাত দ্রব্য, চামড়াজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, ওভেন গার্মেন্টস, কৃষিজাত পণ্য, এগ্রোপ্রসেসিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, হস্তশিল্পজাতদ্রব্য, প্লাস্টিকজাত পণ্য, ওভেন ও নিটওয়্যার পোশাক, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন রফতানির পণ্য।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পর ৩৪৮ মিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় নিয়ে দেশের যাত্রা শুরু হয়। গত অর্থবছরের পণ্য ও সেবা খাত মিলে এ রফতানি দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে আমাদের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন হচ্ছে। আশা করছি, চলতি অর্থবছর শেষে রফতানি আয় ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে এটাই শেষ প্রোগ্রাম উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আজ প্রোগ্রাম শেষে রাতে আমার নির্বাচনী এলাকা ভোলায় চলে যাব। অর্থাৎ এরপর আর কোনো প্রোগ্রাম করা হবে না।

নির্বাচনে দেশ এখন দুভাগে বিভক্ত। একটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি অন্যটি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। আমরা আশা করব, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দলকে জনগণ ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আনবে।

বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা অপচলিত পণ্য রফতানিতে উৎসাহ দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি ও সুযোগ-সুবিধা প্রধান করছি। আশা করছি, ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন পণ্য ও সেবা রফতানি করে এ সুযোগ গ্রহণ করবে, রফতানি আয় বাড়াবে।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আগামী ২০২১ সালে দেশের রফতানি বাণিজ্যে ৬০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে সক্ষম। তবে এ জন্য আমাদের কোয়ালিটি সম্পূর্ণ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবোকাঠামোর নিশ্চয়তা দিতে হবে।

সরকারি এক গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, সিআইপি হিসেবে নির্বাচিত ব্যক্তিরা সচিবালয়ে প্রবেশে পাস, গাড়ির স্টিকার, জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, সড়ক, রেলপথ ও জলপথে সরকারি যানবাহনে তাদের জন্য আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন তারা।

একইসঙ্গে সিআইপিদের জন্য ব্যবসা-সংক্রান্ত কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে উদ্দেশ্য করে “লেটার অব ইনট্রোডাকশন” ইস্যু করবে। সিআইপিরা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ নিজের চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধায় অগ্রাধিকার পাবেন। সিআইপি (রফতানি) কার্ডের আওতায় এক বছর ও পরবর্তী সিআইপি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তারা এ সুবিধা পাবেন।

বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য প্রমুখ।