forgain investmentদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে কয়েক মাস ধরে পর্যবেক্ষণের পর ডিসেম্বরে বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছে বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী। তারা বাজারে শেয়ার বিক্রির চেয়ে বেশি পরিমাণে কিনছে। বাজারের লেনদেন বিশ্লেষণ করে এমনটি জানা গেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশ আকর্ষণীয় হওয়ায় বিদেশিরা বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

বছরের শেষ মাসে বিদেশিরা ডিএসইর মাধ্যমে ২৪৬ কোটি টাকার মূল্যের শেয়ার কিনেছেন। বিক্রি করেন প্রায় ৩৪৮ কোটি টাকার শেয়ার। গত মাসে নিট বিক্রি ছিল প্রায় ১০২ কোটি টাকার। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর মাধ্যমে শুধু ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার কেনাবেচা করেন বিদেশিরা।

টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ছিল ১৬৫ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার। এছাড়া গত মাসে ডিএসইতে আট হাজার ৭০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচায় বিদেশিদের অংশ ছিল মোটের ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত মাসে যত শেয়ার কেনা হয়েছে তাতে বিদেশিদের অংশ ছিল মোটের ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বিপরীতে বিক্রিতে এর হার ছিল ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

টানা চার বছর বৃদ্ধির পর সদ্য সমাপ্ত বছরে দেশের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশিরা তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেছেন। বছরজুড়ে যত টাকার শেয়ার কিনেছেন বিক্রি করেছেন এর থেকে বেশি। মোট লেনদেনে অবশ্য তাদের অংশগ্রহণ ২০১৭ সালের তুলনায় বেড়েছে।

ডিএসই থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শুধু প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর মাধ্যমে তারা যত শেয়ার কিনেছিলেন তার চেয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার শেয়ার বেশি বিক্রি করেছেন। এর আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা চার বছরে বিক্রির তুলনায় পাঁচ হাজার ৫৮১ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কিনেছিলেন বিদেশিরা।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিদেশিরা পোর্টফোলিও অ্যাকাউন্ট থেকে মোট নয় হাজার ৫৮৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা করেন। এরমধ্যে কিনেছিলেন চার হাজার ৪৯৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার এবং বিক্রি করেছেন পাঁচ হাজার ৯০ কোটি টাকার শেয়ার। এ বছর ডিএসইতে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। কেনা ও বেচা উভয় দিক বিবেচনায় বিদেশিদের অংশ ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ২০১৭ সালে যা ছিল ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

২০১৭ সালে বিদেশিদের অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১১ হাজার ৪৪৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। কেনার পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৫৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকার এবং বিক্রি হয় চার হাজার ৮৭০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার। ওই বছর বিক্রি তুলনায় এক হাজার ৭০৫ কোটি টাকার শেয়ার বেশি কেনা হয়।

২০১৬ সালে তারা আট হাজার ৭৯৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা করেছিলেন। এতে কেনার পরিমাণ বেশি ছিল এক হাজার ৩৪০ কোটি টাকার। ২০১৫ সালে মোট সাত হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচায় বেশি কেনা হয় ১৮৫ কোটি টাকার। ২০১৪ সালের ছয় হাজার ৬০১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এতে কেনার পরিমাণ বেশি ছিল দুই হাজার ৬২০ কোটি টাকার।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছরের তিন মাসে (জানুয়ারি, মার্চ ও সেপ্টেম্বর) বিদেশিদের অ্যাকাউন্ট থেকে নিট ৩৭৯ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার কেনা হয়েছিল। বাকি নয় মাসে তিন হাজার ১২৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনার বিপরীতে চার হাজার ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়। অর্থাৎ এই নয় মাসে কেনার থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে ৯৭২ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার।