Dividends-1দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ডিভিডেন্ড ঘোষনাকে সামনে রেখে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক বছর সম্পন্ন হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দর পতনে একেবারে তলানিতে নেমে এসেছিল ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কিছু শেয়ার। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি সঞ্চিত হচ্ছিল এ খাতের শেয়ারে। অন্যদিকে সরকার পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ শুরু করছেন। এছাড়া সামনে ডিভিডেন্ড মৌসুম। তাই বিনিয়োগকারীরা ভাল ডিভিডেন্ডের আসায় নতুন করে ঝুঁকছেন।

এদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের মৌসুম চলছে। ফলে এসব খাতের শেয়ারের কদর বাড়ছে। তবে সর্বশেষ দেয়া লভ্যাংশে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর প্রকৃত প্রাপ্তি (ডিভিডেন্ড ইল্ড) খুবই সামান্য। যা আমানতের সুদের হারের চেয়ে অনেক নিচে। দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের পর্যালোচনায় এমনটিই জানা গেছে।

একটি কোম্পানির যে পরিমাণ লভ্যাংশ দেয় তা থেকে বিনিয়োগকারীর প্রকৃত প্রাপ্তি নির্ভর করে তার ইল্ডের ওপর। কারণ বাজারে শেয়ারের দাম বেশি হলে এবং লভ্যাংশ বেশি দিলেও প্রকৃত প্রাপ্তি কম হয়। অন্যদিকে তুলনামূলক কম লভ্যাংশ দিলেও প্রাপ্তি ভালো হতে পারে যদি শেয়ারের দাম কম হয়।

তাই ঘোষিত লভ্যাংশের হার প্রকৃত বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য হয় শেয়ারের বাজারমূল্যের নিরিখে শতকরা কত লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে তা। প্রকৃত প্রাপ্তি বুঝা যায়, ডিভিডেন্ড ইল্ডের মাধ্যমে। কোনো কোম্পানির লভ্যাংশকে শেয়ারের সর্বশেষ বাজার দর দিয়ে ভাগ করে ১০০ দিয়ে গুন করলে ডিভিডেন্ড ইল্ড পাওয়া যায়।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডিসেম্বর ক্লোজিং ১০৯ কোম্পানির ডিভিডেন্ডের অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ অর্থবছর শেষ হওয়া কোম্পানিগুলোর পর্ষদ সভা অনুষ্ঠান করার সময় এসে গেছে। আর তাই খুব শিগগিরই এ সকল কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসবে। মূলত এর মধ্যে সবগুলো কোম্পানিই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা খাত এবং বহুজাতিক হিসেবে তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে ব্যাংক খাতে রয়েছে ৩০টি কোম্পানি, বীমা খাতে ৪৭টি, আর্থিক খাতে ২২টি এবং ১০টি বহুজাতিকসহ মোট ১০৯ কোম্পানি রয়েছে।

এসব কোম্পানির অর্থবছর শেষ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮। সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ১৯৮৭ এর ১২(৩এ) এবং ১৩নং ধারায় বলা হয়েছে বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরী করতে হবে এবং ১৪ দিনের মধ্যে তা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশনে জমা দিতে হবে। সেই হিসেবে বার্ষিক প্রতিবেদনের সাথে সাথে ডিভিডেন্ডের ঘোষণাও আসতে পারে।
হিসাব বছর শেষ হওয়া

১০৯টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে: ব্যাংক খাতে কোম্পানিগুলোর মধ্যে:- এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রার্স্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং উত্তরা ব্যাংক।

বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যেঃ- অগ্রনী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, গেøাবাল ইন্স্যুরেন্স, গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স,

কর্নফুলী ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্সুরেন্স, নর্দান ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতী ইন্স্যুরেন্স, প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স,

প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, রুপালী ইন্স্যুরেন্স, রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স এবং ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের: বে-লিজিং, বিডি ফাইন্যান্স, বি আইএফসি, ডিবিএইচ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ইসলামিক ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, মাইডাস ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইউনাইটেড ফাইন্যন্স এবং উত্তরা ফাইন্যান্স লিমিটেড।

যেসব বহুজাতিক কোম্পানি কিছুদিনের মধ্যেই ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তার মধ্যে রয়েছেঃ বাটা সু, বিট্রিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেড (বিএটিবিসি), গøাক্সো স্মিথকাইন, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, লিন্ডে বাংলাদেশ, আরএকে সিরামিক, রেকিট বেনকিজার, গ্রামীনফোন এবং সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড।