DSEদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নতুন বছরের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। নির্বাচনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা কেটে গিয়ে এক ধরনের আস্থা ফিরে এসেছে। বিশেষ করে নতুন অর্থমন্ত্রীর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও প্রত্যাশা বাড়ছে। বেড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সব সূচক। লেনদেনের হার বেড়েছে কয়েক গুণ। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন বেড়েছে।

গত আট কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট সূচক বেড়েছে; যা আগের এক বছরেও বাড়েনি। লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি। তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। ২০১৮ সালের পুরো বছরেও পরিস্থিতি এমন ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়নি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঁচ কার্যদিবসে গড় লেনদেন হয়েছে ৯৮৫ কোটি টাকার; যা আগের সপ্তাহ থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। প্রতিদিনই লেনদেন গড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে গড় ৯৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে; যা আগের সপ্তাহ থেকে ২১৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা ৩৭.৩৬ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৭১৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এই ইতিবাচক ও চাঙ্গা অবস্থান ধরে রাখতে নতুন অর্থমন্ত্রী উদ্যোগী হবেন বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে বড় জয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত বহন করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। সেটা রাজনীতির চেয়ে সরকারের প্রতি বেশি। ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই ঘুরে দাঁড়ানো ধরে রাখতে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। শুধু বসে থাকলে বাজার এ রকম না-ও থাকতে পারে। পুঁজিবাজার নিয়ে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

Page-01 (32)ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড পাবলিক পলিসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাজারে যে উত্থান হয়েছে তা স্বাভাবিক। অর্থমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে; এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালে বাংলাদেশের ক্যাপিটাল ফ্লো বাড়বে। আর্থিক খাতে যে সঙ্কট ছিল তা অনেকখানি লাঘব হবে। অর্থমন্ত্রী পরিবর্তন মানুষের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার চ্যালেঞ্জ হবে বাজারকে কুলডাউন করা। সরবরাহ ব্যবস্থাকে ফ্লেক্সিবল করা, নতুন নতুন শেয়ার নিয়ে আসা। যাতে বিনিয়োগকারীদের চাহিদা পূরণ করা যায়। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের হুজুগে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোম্পানি দেখে বিনিয়োগ করতে হবে। কিছুতেই জাঙ্ক বা বাজে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের পর সরকারের ধারাবাহিকতার একটি প্রতিফলন বাজারে পড়ছে এবং অংশগ্রহণ বাড়ছে। আমি বাজারের বর্তমান চিত্রকে পজেটিভভাবে দেখছি। এটাকে ধরে রাখতে হবে। এজন্য ভালো ভালো শেয়ার আনতে হবে। সেই সঙ্গে আজেবাজে শেয়ার নিয়ে খেলাধুলা করা শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মৌলিক শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। মৌলিক শেয়ারে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা ঠকবেন না।’