আলহাজ্ব টেক্সটাইলকে অগ্রনী ব্যাংকের দিতে হবে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: জল্পনা কল্পনার অবসান হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও অগ্রনী ব্যাংকের এফডিআর সংক্রান্ত মামলার রায় এসেছে। অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইলের করা এফডিআর মামলার রায় দিয়েছে মহামান্য হাইকোর্ট।
এতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পাওনা ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা পরিশোধ করে ৭ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মানমুন রহমান এবং বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের যৌথ বেঞ্জ এই আদেশ প্রদান করেন। এই মামলায় অগ্রণী ব্যাংকের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা ও মনিরুজ্জামান। আর আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট প্রবির নিয়োগী এবং হাসনাত কাইউম।
অগ্রণী ব্যাংকের আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার কথা জানান ব্যাংকটির আইনজীবি।
এদিকে, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের আইনজীবী বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার কিছু নেই। কারণ অগ্রণী ব্যাংক এবং আলহাজ্ব টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষের যৌথ সম্মতিতে পিনাকী অ্যান্ড কোম্পানিকে অডিটর নিয়োগ করা হয়েছিল। সব নিয়ম পরিপালন করে অডিটর কোম্পানির গত ২৪/১০/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের নিকট আলহাজ্ব টেক্সটাইলের মোট পাওনা ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
আলহাজ টেক্সটাইল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমএ) অধীনে সরকারি প্রতিষ্ঠান ছিল। পরবর্তীতে কোম্পানিটিকে বেসরকারিকরণ করা হয়। ২০০৯ সালে আলহাজ্ব টেক্সটাইল অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে এফডিআর সংক্রান্ত মামলা করে। এরপর ২০১১ সালে আদালত সুদসহ কোম্পানিটির টাকা পরিশোধ করার জন্য নির্দেশনা দেয়। এই নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করে অগ্রণী ব্যাংক আপিল করে ২০১৪ সালে। তখনও আদালত ১ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে ছিল।
সেই সময়ে এক হিসাব ছিল ১৯৮৯ সালে থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে অগ্রণী ব্যাংকের ইশ্বরদী শাখায় আলহাজ্ব টেক্সটাইলের এফডিআর হয়েছে ৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। যার মধ্যে ব্যাংক ৮ কোটি ১১ টাকা ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে।
৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাব আল-হাজ্ব টেক্সটাইলের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর পুরোটাই বোনাস লভ্যাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৮ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ১২ টাকা ৩৮ পয়সা।
আর প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর,১৮) কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ২১ পয়সা। এ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ১৯৮৩ সালেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির মোট শেয়ারের ১৯.২০ শতাংশই রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের দশমকি ০৩ শতাংশ সরকারের কাছে, ১৪.৭৭ শতাংশ রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে, আর ৬৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।