takaদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আগামী মুদ্রানীতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নতুন মুদ্রানীতিতে ঋণের চাহিদা বাড়ানোর দিকে যেমন নজর রাখা হবে, তেমনি ঋণের জোগান বাড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ানোর প্রভাবে যাতে মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে দৃষ্টি রাখা হবে সেদিকেও।

চলতি অর্থবছরের শেষার্ধের (জানুয়ারি থেকে জুন) মুদ্রানীতি এ মাসের শেষদিকে ঘোষণা করা হবে। এ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছিল গত বছরের ৩১ জুলাই। মুদ্রানীতি নিয়ে ইতিমধ্যে তিন দফায় প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে। আগামী পর্ষদের বৈঠকে মুদ্রানীতির খসড়াটি উপস্থাপন করা হবে। পর্ষদ এটি অনুমোদন করলে ঘোষণা করা হবে।

অর্থনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে বিনিয়োগে যে মন্দা যাচ্ছে, তা কাটাতেই এবারের মুদ্রানীতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল নির্ধারণ করা হবে। রয়েছে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর চাপও। সব মিলে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হবে আগামী মুদ্রানীতিতে।

এছাড়া টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগের সরকার অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে সংস্কারমুখী যেসব কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, তার অংশ হিসেবে ঋণের সুদের হার কমানো, ব্যাংকে তারল্য প্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ জন্য সরকারের রাজস্ব, বৈদেশিক এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর ’১৮) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। গত অর্থবছরের (২০১৭-১৮) একই সময়ে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

মূলত তারল্য সংকটের কারণে অর্থবছরের প্রথমার্ধে লক্ষ্য অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এ কারণেই দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর কৌশল থাকবে। একই সঙ্গে এ ঋণের জোগান দিতে ব্যাংকিং খাতে তারল্য বাড়ানোর জন্যও বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, নতুন সরকারের কাছে বিনিয়োগ বাড়ানোর একটি প্রত্যাশা বেসরকারি খাতের রয়েছে। মুদ্রানীতিতে কিছু পদক্ষেপ নিয়ে সরকার সেটা দৃশ্যমান করতে চাইবে। তবে মুদ্রানীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এত খেলাপি ঋণ নিয়ে মুদ্রানীতি সফল হবে না। এজন্য খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। ঋণমান বাড়াতে হবে। বিশেষ করে শিল্প ও সেবা খাতে ঋণের জোগান বাড়াতে হবে।