দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও স্বপ্নদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নতুন সরকারের নেতৃত্বে দেশে শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তিনি৷ গত ৩১ জানুয়ারি নিকুঞ্জে ডিএসইর নিজস্ব টাওয়ারের মাল্টিপারপাস হলে ৫৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।

আবুল হাশেম বলেন, বর্তমান সরকার শেয়ারবাজারবান্ধব। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই সরকারের অনেক অবদান রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১০ বছরে শেয়ারবাজারে অনেক সংস্কার হয়েছে। যা দেশের শেয়ারবাজারের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ডিএসইতে একটা গুনগত পরিবর্তন ঘটেছে। অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হওয়া সত্বেও সফলভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজমেন্ট গত এক বছর কৌশলগত বিনিয়োগকারী আনার ব্যাপারে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করে। নিরলস পরিশ্রম ও দীর্ঘ কর্মযজ্ঞের পর অবশেষে বিশ্বের খ্যাতিমান এক্সচেঞ্জ শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসই’র কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি ডিএসই’র আন্তর্জাতিকীকরণ, মানসম্পন্নকরণ এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে একটি বড় অর্জন।

তিনি আরো বলেন, ডিএসই ও পুঁজিবাজার উন্নয়নে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং কিছু সম্পন্ন হয়েছে। যেমনঃ কৌশলগত বিনিয়োগকারীর অন্তর্ভূক্তি, ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট কোম্পানি গঠন এবং স্মল ক্যাপিটাল প্লাটফর্ম বাস্তবায়ন ইত্যাদি।

এটিবি (অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড)-২০১৮ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের অন্তর্ভূক্তিতে প্রযুক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রস্তাব বাস্তবায়নের ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা এবং কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিবৃন্দ যৌথভাবে কাজ করছে। পরিশেষে তিনি বলেন, আমাদের একটিই লক্ষ ডিএসইকে এ অঞ্চলের মধ্যে নেতৃস্থানীয় স্টক এক্সচেঞ্জে পরিনত করা। সকলের অব্যাহত সমর্থন, গঠনমূলক পরামর্শ নিয়েই সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এজিএমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নব-নির্বাচিত সরকারকে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম৷ এদিন ডিএসইর ৯ম বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠিত হয়। এতে অ্যাসোসিয়েশন অব ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের বিভিন্ন অনুচ্ছেদসমূহের পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংযোজন করা হয়৷

এজিএমে শেয়ারহোল্ডাররা নতুন প্রডাক্ট চালু করার জোড় দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আহবান করেছেন তারা। শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে এজিএমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ডিএসইর পরিচালকমন্ডলীর প্রতিবেদন, নিরীক্ষকবৃন্দের প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী গ্রহণ, বিবেচনা অনুমোদিত হয়।

এছাড়াও পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশকৃত ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। গত ২৪ জানুয়ারী ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে মোঃ রকিবুর রহমান পুনঃনির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেন৷ তবে এতে আর কোন মনোনয়ন জমা না পড়ায়, নির্বাচন কমিশন মোঃ রকিবুর রহমানকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

এজিএমে আনুষ্ঠানিকভাবে মোঃ রকিবুর রহমান পুন:রায় ডিএসই’র পরিচালক হিসেবে বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হন। সভায় বক্তব্য রাখেন বুলবুল সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস শহিদুল হক বুলবুল, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন,

এ্যাংকর সিকিউরিটিজ লিঃ এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ জেড এম নাজিম উদ্দিন, গ্রীনল্যান্ড ইকুইটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রাজিব আহসান, প্রুডেনসিয়াল সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমাদুল হক, মডার্ন সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা নূর-ই-নাহরিন, প্রাইলিংক সিকিউরিটিজ লিঃ এর চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম,

মোনা ফাইন্যান্সয়াল সিকিউরিটিজ লিঃ এর চেয়ারম্যান আহসানুল ইসলাম টিটু, এমপি, রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী, ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিবিএ’র সাবেক প্রেসিডেন্ট মোস্তাক আহমেদ সাদেক, কাইয়ুম সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাঈম মোঃ কাইয়ুম,

বালি সিকিউরিটিজ লিঃ এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শফিকুর রহমান, ডিএসই’র পরিচালক ও মিডওয়ে সিকিউরিটিজ লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ রকিবুর রহমান। সভায় ডিএসই টাওয়ার প্রজেক্ট, নতুন প্রোডাক্টসহ শেয়ারহোরল্ডারদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে. এ. এম. মাজেদুর রহমান।