দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: জ্বালানি তেলের নিম্নমূল্য ও বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে বিদ্যুৎ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে চাহিদা ও সরকার কর্তৃক মার্জিন বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি বিপণন কোম্পানিগুলোর মুনাফা বেড়েছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জ্বালানি খাতের ১৯ টি কোম্পানির মধ্যে ৫৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি, অন্যদিকে সরকার কর্তৃক জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মুনাফায়।

মার্চেন্ট ব্যাংক সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসাইন বলেন, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকারের ধারাবাহিক নীতি ও পদক্ষেপের কারণে কয়েক বছর ধরেই ভালো করে আসছে এ খাতের কোম্পানিগুলো। বেশ কয়েকটি কোম্পানি নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছ, যা তাদের বিক্রি ও মুনাফা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাও কিছু কোম্পানির নিট মুনাফা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মুনাফা বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি খাতের ১৯ টি কোম্পানির মধ্যে ১৭ টি কোম্পানি ৩১ ডিসেম্বর, ১৮ তারিখে সমাপ্ত অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এগুলোর মধ্যে ১০টি বা ৫৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। কমেছে ৬টির ইপিএস। অন্যদিকে একটি কোম্পানি লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিএস বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডেসকোর ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৭৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮৬ পয়সা। ডরিন পাওয়ারের ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৮৭ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৮১ পয়সা। ইন্ট্রাকো সিএনজির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৫১ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩৯ পয়সা। যমুনা অয়েল কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১২ টাকা ৮ পয়সা। মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৬৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১১ টাকা ৭৭ পয়সা।

পদ্মা অয়েলের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৩৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ১২ টাকা ৮২ পয়সা। পাওয়ার গ্রিডের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৯৭ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৬৪ পয়সা। সামিট পাওয়ারের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫৪ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৩৬ পয়সা। তিতাস গ্যাসের ইপিএস ছিল ২ টাকা ১৪ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ৮৬ পয়সা। ইউনাইটেড পাওয়ারের সমন্বিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৬৯ পয়সা এবং এককভাবে ইপিএস ৫ টাকা ৩১ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে এককভাবে ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৬১ পয়সা।

সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল গত বছর অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি ১৭ পয়সা লোকসান দিলেও এবার ৪ পয়সা আয় করেছে। এদিকে যেসব কোম্পানির ইপিএস কমেছে সেগুলো হচ্ছে- বারাকা পাওয়ারের ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫ পয়সা। ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৯৯ পয়সা,

আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ১৪ টাকা ৮ পয়সা। জিবিবি পাওয়ারের ইপিএস ৪৬ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ৬২ পয়সা। খুলনা পাওয়ারের ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৮ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ২ টাকা ৪৮ পয়সা। এমজেএল বাংলাদেশের ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৮২ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ২ টাকা ৮৫ পয়সা, সামিট পাওয়ারের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা, আগের বছর একই সময় তা ছিল ২ টাকা ৮২ পয়সা।