জীবন বীমায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রিমিয়াম হাতছাড়া
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ২০১৮ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে দেশের জীবন বীমা খাতে ৩২টি কোম্পানির ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৬৩টি পলিসি তামাদি হয়েছে, যেগুলোর বিপরীতে তারা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রিমিয়াম হাতছাড়া করেছে। জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিগুলোর মোট ১ কোটি ৮ লাখ ৯৬ হাজার ১৯টি পলিসি সচল ছিল।
এ সময় নতুন পলিসি বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৪টি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে কোম্পানিগুলোর দাখিল করা তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ চিত্র উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রাহক বীমা পলিসির প্রিমিয়াম পরিশোধ না করলে একপর্যায়ে সেগুলো তামাদি হয়ে যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে তামাদি পলিসির হার সাধারণত ২০ শতাংশে সীমিত থাকে। আমাদের দেশে এ হার আশঙ্কাজনক রকম বেশি। ৯০ শতাংশ পলিসি তামাদি হয়ে যাওয়ার উদাহরণও দেখা যাচ্ছে।
আইডিআরএর নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন, যুগ্ম সচিব) খলিল আহমদ বলেন, অবশ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিগুলোর তামাদির হার কমেছে। যদিও এ হার আরও অনেক কমিয়ে আনার তাগিদ তার।
জানা যায়, গতবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে সবচেয়ে বেশি টাকার পলিসি তামাদি হয়েছে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। তাদের গ্রাহকরা ২ লাখ ১ হাজার ৬৮৩টি পলিসিই আর সচল রাখেননি, যেগুলোর বিপরীতে কোম্পানিটি ২১২ কোটি ১১ লাখ টাকার প্রিমিয়াম পেতে পারত।
আইডিআরএর তথ্য অনুসারে, এ কোম্পানির ৯০ শতাংশ পলিসিই মাঝপথে ঝরে পড়েছে। টাকার অংকে তামাদি তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ। আলোচ্য সময়ে তাদের তামাদি পলিসির সংখ্যা ছিল ২ লাখ ২৯ হাজার ৩৩, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১৮০ কোটি ৪৪ লাখ। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে এ কোম্পানির ৬০ শতাংশ পলিসিই তামাদি।
এদিকে মেটলাইফের তামাদি প্রিমিয়াম ১৪৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির তামাদি পলিসির সংখ্যা ৬১ হাজার ৫৪৮। এ কোম্পানির পলিসির হার মাত্র ২ শতাংশ। এছাড়া ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তামাদি প্রিমিয়াম ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, হোমল্যান্ড লাইফের ১২১ কোটি ৫১ লাখ, রূপালী লাইফের ১০০ কোটি ১৬ লাখ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ৮০ কোটি ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তামাদি প্রিমিয়ামের পরিমাণ ৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা।