দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত মিউচুয়াল ফান্ড এখন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে বিনিয়োগকারীদের কাছে। একের পর এক দরপতনে বেশিরভাগ ফান্ডের মূল্য এখন তলানিতে এসেছে। কিছুতেই যেন কাটছে না দুর্দিন। ফলে বাজার স্থিতিশীলতার এ মিউচুয়াল ফান্ড কিনে বিপাকে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারের প্রাথমিক বিনিয়োগকারীদের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা সাধারণ একটি রীতি। কিন্তু পুঁজিবাজারের টানা দরপতন, ফান্ড ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম আর অদক্ষতার কারণে বড় অংকের লোকসানে পড়েছে। এছাড়া, ধারাবাহিক পতনে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের সম্পদমূল্য ৬ থেকে ৭ টাকায় (১০ টাকার বিপরীতে) নেমেছে। লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতাও নেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের। যার কারণে এর ওপর আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, আমাদের বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর এ অবস্থার জন্য অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোই দায়ী। তারা ফান্ডগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। এক কথায় তাদের অব্যবস্থাপনা আর অদক্ষতার কারণেই ফান্ডগুলোর এ অবস্থা। মিউচুয়াল ফান্ডের এ দূরবস্থা থেকে উন্নয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনার পরও পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের দুর্দিন কাটছে না। ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে অধিকাংশের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে। কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম অভিহিত মূল্যের অর্ধেকের নিচে নেমেছে। ফলে ৫ হাজার ৩শ’ কোটি টাকার এ তহবিলের বাজারমূল্য ২ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

আর এখাতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে এ বছরও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা নেই। সা¤প্রতিক সময়ে ১০ বছর মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের সময় আরও ১০ বছর বাড়ানো হয়েছে। এর আগেও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাজারে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মিউচুয়াল ফান্ডের এভাবে পতন অনাকাক্সিক্ষত। কারণ তারা কোম্পানির মৌল ভিত্তি বিবেচনা করে বিনিয়োগ করে।

এ বিষয় জানতে চাইলে তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের লোকসান অনাকাঙ্খিত। কারণ তাদের রিসার্চ টিম আছে। তারা দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে না।