দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড গত বছরে বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির ২৪ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধির বিপরীতে কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কম্পিউটার বিক্রিতে ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

তাছাড়া প্যানেল টেলিভিশন ২৮ শতাংশ, ওয়াশিং মেশিন ২৪ শতাংশ, কিচেন ও স্মল অ্যাপ্লায়েন্সেস ২০ শতাংশ এবং রেফ্রিজারেটরের বিক্রি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। মূলত ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে জানিয়েছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা।

২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানির পারফরম্যান্সের বিষয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গ্যাভিন জে. ওয়াকার বলেন, গত তিন বছরে বিক্রি দ্বিগুণ বাড়ার পাশাপাশি আয় বেড়েছে আড়াই গুণেরও বেশি। এ পারফরম্যান্স সিঙ্গারকে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় আন্তর্জাতিক অ্যাপ্লায়েন্সেস ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চলতি বছর এবং সামনের দিনগুলোয় দ্রæত স¤প্রসারণশীল ও সম্ভাবনাময় বাজার ধরে রাখতে আমরা রিটেইল ও হোলসেল ব্যবসা স¤প্রসারণের পরিকল্পনা করছি।

গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সভায় ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশের পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার পণ্য। যেখানে আগের বছরে বিক্রি ছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির গ্রস মার্জিন দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশে।

এ সময়ে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। বিক্রয় প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সিঙ্গার বাংলাদেশ পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির পরিচালন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশে, যা এর আগের বছরে ছিল ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৯২ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরে ছিল ৭৫ কোটি টাকা। ২০১৮ হিসাব বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১১ টাকা ৯৬ পয়সা, যা এর আগের বছরে ছিল ৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮-তে এর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ১৩ পয়সা।

সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯০৫ সাল থেকে এ অঞ্চলে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কোম্পানিটি সেলাই মেশিন ও কিস্তিতে পণ্য বিক্রির জন্য সুপরিচিত। বর্তমানে সিঙ্গার বাংলাদেশ নিজস্ব ব্র্যান্ডের বাইরে অন্যান্য ব্র্যান্ডের পণ্যও বিক্রি করছে। দেশব্যাপী ৩৮৫টি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি ৭২০-এর বেশি হোলসেল ডিলারের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে কোম্পানিটি।

১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৭৬ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ১৩৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের মধ্যে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক নেদারল্যান্ডসভিত্তিক রিটেইল হোল্ডিংস বিহোল্ড বিভির হাতে ৫৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৫ দশমিক শূন্য ৫, বিদেশী বিনিয়োগকারী ৭ দশমিক ৩৪ ও বাকি ২০ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।