দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ক্রেতা সংকটে পুঁজিবাজার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনে পূর্ব ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেও সব ধরনের সূচক কমেছে। টানা নয় সপ্তাহ ধরে পুঁজিবাজারে পতন চলছে। ফলে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সিন্ডিকেট চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে।

এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গড় লেনদেন নেমে এসেছে ৩৬১ কোটি টাকায়, যা ২০১৮ সালের গড় লেনদেনের চেয়েও প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। তারল্য সংকটই বাজার পরিস্থিতি অবনতির প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, আর্থিক খাতের তারল্য সংকট পুঁজিবাজারে পড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে আমানত কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। বর্তমানে ২০টি ব্যাংক তারল্য সংকটে রয়েছে। ব্যাংকগুলো আমানতের তুলনায় ঋণ বেশি বিতরণ করায় বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) বাড়িয়ে দেওয়ার কারণেও তারল্য সংকট বেড়েছে। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা আট মাসেই পূরণ হয়ে গেছে। এসবই তারল্য সংকট তৈরি করেছে। ফলে সুদহারও বেড়ে গেছে।

এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় থাকা বিভিন্ন কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ারেও বড় অংকের অর্থ আটকে গেছে। আবার টানা মন্দার কারণে শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় নতুন করে লেনদেন সক্ষমতা হারিয়েছেন অধিকাংশ বিনিয়োগকারী। উল্লিখিত কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় লেনদেন তলানিতে ঠেকেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৭ সালে ডিএসইর গড় লেনদেন ছিল ৮৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। পরের বছর পুঁজিবাজারের মন্দাবস্থায় ডিএসইর প্রধান সূচকটি ১৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট হারায়। এ সময় গড় লেনদেন নেমে আসে ৫৫২ কোটি টাকায়।

জাতীয় নির্বাচনের পর বাজার পরিস্থিতি চাঙ্গা হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডিএসইর গড় লেনদেন ৯৭১ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। তবে নয় সপ্তাহ ধরে টানা দরপতনের কারণে গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন নেমে এসেছে ৩৬১ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ কম।