দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ব্যাপকভা্বে ছড়িয়ে পড়া ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে প্রয়োজনে নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

আজ রোববার (১২মে) সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে নিরাপদ খাদ্য ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনের পর মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ তে খাদ্যে ভেজালের সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা।

ইদানিং নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধনের একটা দাবি উঠেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এইটুকু বলতে চাই, আইনটা প্রথম হয়েছে। আমরা প্রথমই যদি যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড দিতাম…আপানারা জানেন আমরা সমালোচনা বেশি করতে পারি, আমরা ভাল জিনিস কম গ্রহণ করতে পারি। আইনটা পাস হয়েছে অর্থাৎ বাচ্চাটার জন্ম হয়েছে। সংযোজন-বিয়োজন অনেক কিছুই করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ভেজালের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা ও গণআন্দোলন গড়ে তুলি তবে ৫ বছর লাগবে না, জনগণের ভয় ওদের মৃত্যুদণ্ডের চেয়ে বড় ভয়। এটা যদি আমরা গড়ে তুলতে পারি তবে আইন সংশোধনের প্রয়োজন হবে না।’

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আর যদি প্রয়োজন হয়েই পড়ে, আইন সংশোধনের প্রয়োজন তখন হয়, যখন মানুষ বেশি ভেজাল দেয়, আমরা যখন কন্ট্রোল করতে পারব না। আমি মনে করি সচেতনতা বৃদ্ধি করে যদি আমরা গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পারি তবে ভেজাল এমনিতেই থেমে যাবে। আইন সংশোধনের দরকার হবে না। আর যদি আইন সংশোধনের দরকারই হয়, তবে যাবজ্জীবন-মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই করা যেতে পারে। জনগণের স্বার্থে অনেক কিছুই করা যেতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই না শুধুমাত্র ১১ মাস ভেজাল খেয়ে শুধু রমজান মাসে নির্ভেজাল খাই, আমরা এটা চাই না। আমরা রমজান মাস থেকে শুরু করেছি, ১২টি মাস ২৩৫ দিনই যেন আমরা নিরাপদ খাদ্য খেতে পারি। যারা ভেজাল দেয়, তারা হলো এই সমাজের শত্রু।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ও আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে ভেজালে, দুর্নীতিতে, জঙ্গিবাদে ও মাদকে সরকার জিরো টলারেন্স। কেউ যাতে ভেজাল দিতে না পারে সেজন্য আমরা ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হই এবং আমরা গণআন্দোলন গড়ে তুলি, ভেজালের বিরুদ্ধে। আমরা ভেজালকারীদের শাস্তি চাই। ভেজাল নিরোধে আমরা সবাই একমত হব। একমতে একযোগে আজ করব, এটাই হোক আমাদের পবিত্র রমজানের শপথ।’

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যে ভোজাল রোধে আমাদের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট, সিটি করপোরেশনের মোবাইল কোর্ট আছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিম আছে, জেলা প্রশাসনের আছে, র্যাবের আছে আমার মনে হয় ৩০টি টিম কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘সব জিনিসে ভেজাল এটা মনে হয় ঠিক নয়। আমরা যতখানি আতঙ্কিত, সেই আতঙ্কিত মন নিয়ে যদি স্বোচ্চার হওয়ার চেষ্টা করি, নিজেরা যদি সচেতন হই, ভেজাল প্রতিরোধের জন্য আমরা মনের ইচ্ছা পোষণ করি তবে জাতি বেঁচে যাবে, আমরা বেঁচে যাব। আমরা সুন্দর সমাজ ও নির্ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করতে পারব।’

সাধন চন্দ্র বলেন, ‘মানুষকে ভোজালের বিষয়ে সচেতন করতে আমরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভা করছি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এমনকি মসজিদের ইমাম সাহেবদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজে লাগাচ্ছি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আইন উইং ছিল না। আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা সেই উইং চালু করেছি। আমরা সচেতন আছি।