দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের টানা দরপতনে স্মরণকালের মধ্যে এতো দীর্ঘ দরপতনের রেকর্ড নেই। এ কারণে পুঁজিবাজারের চলমান তারল্য সংকট কাটাতে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৮৫৬ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দরপতন ঠেকাতে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) আজ ৭৬০ কোটি টাকা দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র থেকে দেশ প্রতিক্ষণকে নিশ্চিত করেছে।

আজকে টাকা দেওয়ার জন্য সোমবার আইসিবিতে বিএসইসি,বাংলাদেশ ব্যাংক,অর্থমন্ত্রণালয় এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন বৈঠক করেছে। বৈঠকের পর টাকা ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি দিয়েছে আইসিবি। চিঠিতে দেওয়া তথ্য মতে, মোট ৮৫৬ কোটি টাকা চেয়েছে আইসিবি। এর মধ্যে ৭৬০ কোটি টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে আইসিবি। বাকী ৬৬ কোটি টাকা দেওয়া হবে; ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সান বিডিকে বলেন, আজকের ভিতরেই আইসিবিকে টাকা দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে মানণীয় গভর্নর সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আছে। বৈঠক থেকে আসার পরই টাকা দেওয়া হতে পারে।

এর আগে গত ২ মে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এমন একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে চলমান পুঁজিবাজারের লেনদেনে নিম্মগতির ধারা প্রতিরোধের লক্ষ্যে সুদ ও আসল হিসেবে আদায়কৃত মোট আটশত ছাপ্পান্ন কোটি টাকা আবর্তনশীল ভিত্তিতে পূন:ব্যবহার এবং তিনটি বিষয়ের নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি দেয়া হলো।

১. তহবিলের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হলো এবং শেষ বিতরণকৃত ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৩১ মার্চ এ সময় পর্যন্ত।

২. এ তহবিল থেকে আইসিবির মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণের সুবিধাভোগী ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারী ছাড়াও বাজারের মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ ইত্যাদি মূলধন বাজারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট সমাধানে বিএসইসি, আইসিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।

৩.চলমান অবস্থার অনুবৃত্তিক্রমে তহবিলের সামগ্রিক তদারকি, তদারক কমিটির উপর থাকবে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া লাগাতার দরপতন ১৪তম সপ্তাহে গড়িয়েছে। স্মরণকালের মধ্যে এত দীর্ঘ দরপতনের রেকর্ড নেই। এর আগে ২০০৮ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত টানা ১১ সপ্তাহ দরপতন হয়েছিল।

উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ২০১২ সালের ৫ মার্চ প্রণোদনা স্কীমের আওতায় ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। যা ৩ কিস্তিতে ৩০০ কোটি টাকা করে আইসিবির মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের মধ্যে বিতরন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবির সমন্বয়ে গঠিত ‘তদারকি কমিটি’ তত্ত্বাবধানে এই ফান্ড বিতরন করা হয়। যার মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীর্তে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল।

দেশ প্রতিক্ষণ/ ফাতিমা জাহান