দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, অডিট রিপোর্ট দেখে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে। কিন্তু সেই অডিট রিপোর্ট যদি ছয়-নয় হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছ বা অস্বচ্ছতা জানার জন্য অডিটর নিয়োগ দেয়া হলেও প্রতিটি কোম্পানির প্রতিবেদন অস্বচ্ছ বলে প্রকাশ পায়।

আপনারা (সাংবাদিক) জানেন বিগত কয়েক বছর আগে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) গঠনের জন্য আন্দোলন করেছি। যে কাউন্সিল ছয়-নয় আর্থিক হিসাব তৈরী কারীদের ধরার জন্য কাজ করবে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরে আমরা সেই কাউন্সিল গঠনে সফল হয়েছি। কিন্তু আমরা অবাক হয়ে যাই, যখন দেখি এফআরসির নির্দেশে একটি কোম্পানির অডিটর দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি ) এর ডাকে সাড়া দেয় না।

শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে শেয়ারবাজার নিয়ে রিপোর্টিং করা সাংবাদিকদের সঙ্গে ডিএসইর আয়োজিত এক ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. আবুল হাশেম, পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন ও হানিফ ভূইয়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান, সিএফও আব্দুল মতিন পাটোয়ারিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, একটি কোম্পানির ছয়-নয় আর্থিক হিসাব নিয়ে ওই অডিটরকে আইসিএবি ডেকেছিল। কিন্তু পার্টনার দেশের বাহিরে থাকায় ওই অডিটর এই মুহূর্তে দেখা করতে পারবে না বলে জানায়। দেখা করতে সময় লাগবে। এটা খুবই দুঃখজনক। পার্টনার তো ওই কোম্পানির অডিটের সব কাগজপত্র নিয়ে যায়নি। অডিটরের এমন আচরনে আমি হতাশ। জানি না ওই অডিটর কিভাবে এফআরসির নির্দেশকে অমান্য করার ক্ষমতা রাখে। এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে আর যাই হোক শেয়ারবাজার টিকে থাকবে না।

তিনি বলেন, এক কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন, কিন্তু তার কোন খবর বিনিয়োগকারীরা জানে না। এ বিষয়ে ডিএসইর কারন দর্শানোর জবাবে ওই উদ্যোক্তা জানায়, ১ কোটি শেয়ার যদি ঘোষণা দিয়ে বিক্রি করতাম, তাহলে শেয়ারের দাম কমে যেত।

এ থেকেই বোঝা যায় ওই উদ্যোক্তা কত বড় খামখেয়ালিপনা। আমার কাছে মনে হয়, এরা আইনকে তোয়াক্কা করে না। তবে আশার কথা হল ভবিষ্যতে আর এমনটি করা সম্ভব হবে না। এরইমধ্যে উদ্যোক্তাদের শেয়ারে লক করে দেওয়া হয়েছে।

রকিবুর রহমান বলেন, আরেকটি কোম্পানির একদিকে ব্যবসা ও ইপিএস বাড়ছে, আরেকদিকে শেয়ার দর বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে শেয়ার দর যখন আকাশে, তখন উদ্যোক্তারা ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বেচে দিল। এরপরে ব্যবসাও নাই, ইপিএসও নাই। এই যে একটা অরাজকতা, এগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।

ডিএসইর এই পরিচালক বলেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান শেয়ারবাজারের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি। এই বাজারকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আইনের মধ্য থেকে যার যার কাজ, তাকে করতে হবে। যাতে কেউ অনিয়ম না করে। করলেই শাস্তি আওতায় আনতে হবে। এখানে আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে।

আমাদের দেশে শেয়ার দর ও সূচক তলানিতে রয়েছে বলে জানান রকিবুর রহমান। তারপরেও ১০০ পয়েন্ট বাড়লেই নানা জায়গা থেকে নানা রকম মন্তব্য আসে। এক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে।