দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে নতুন আতঙ্ক পিপলস লিজিং’র কেলেঙ্কারি। এ কথা মতিঝিলের সিকিউরিটিজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। পুঁজিবাজার ভালো হবে, বিনিয়োগকারীদের এই প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও পূরণ হচ্ছে না। রবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাসের পর থেকে আবারও নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরিবর্তে কোম্পানিগুলো আগামীতে ‘নো ডিভিডেন্ট’ ঘোষণা করবে এমন গুজব এবং ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দুরাবস্থার খবরে হতাশা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। পাশাপাশি সুশাসনের অভাবে বাজারে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের।

এছাড়াও গ্রামীণফোনের দেনা-পাওনা নিয়ে বিটিআরসি’র সঙ্গে দ্ব›দ্ব এবং পিপলস লিজিং কোম্পানির অবসায়ন ঘোষণায় নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ও তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। পুঁজি ফিরে পাওয়ার পরিবর্তে নতুন করে পৌনে ২৮ লাখ বিনিয়োগকারীদের সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফলে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। নতুন করে সৃষ্ট দরপতনের ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও বাড়ছে হাহাকার বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে পিপলস লিজিং কেলেঙ্কারির ঝড় বইছে পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতের শেয়ারে। নানা অনিয়মে কোম্পানিটি বন্ধ করে দেওয়ার খবরে ব্যাপক দর পতন হয়েছে এই খাতের শেয়ারে। আজ বুধবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাজারে বেশিরভাগ নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) তথা লিজিং কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯২ ভাগ লিজিং কোম্পানি শেয়ারের দর হারিয়েছে।

উল্লেখ, মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পিপলস লিজিং বন্ধ করে দেওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবর অনুসারে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থতার কারণে পিপলস লিজিংকে বিলুপ্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই খবরে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তার প্রভাব আর্থিক এই খাতের শেয়ারে বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। তাতে কমে যায় শেয়ারের দাম।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আর্থিক খাতের দুর অবস্থা দেখে এবং পিপলস লিজিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে আছে। তারা লোকসান থেকে বাচার জন্য আর্থিক খাতের শেয়ার বেশি বিক্রি করছে।

বাজার বিশ্লেষন করে দেখা যায়, আজ ডিএসইতে আর্থিক খাতের ৯২ শতাংশ বা ২১ টি কোম্পানির দর কমেছে। বেড়েছে ৪ শতাংশ বা মাত্র একটি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪ শতাংশ বা একটি কোম্পানির শেয়ার দর।

ডিএসইতে আজ আর্থিক খাতে সব চেয়ে বেশি দর কমেছে আইসিবি। কোম্পানিটির শেয়ার ২ টাকা কমেছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তরা ফিন্যান্স। কোম্পানিটির ১ টাকা ৭০ পয়সা কমেছে। তৃতীয় স্থানে এফএএস ফিন্যান্স, লংকাবাংলা ফিন্যান্স ও ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ৮০ পয়সা কমেছে। দর বেড়েছে ইসলামিক ফিন্যান্সের। কোম্পানির ২০ পয়সা দর বেড়েছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ফনিক্স ফিন্যান্সের শেয়ার দর।