দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নাম তার সোহেল গাজী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ের ডেসপাচ রাইডার হিসেবে নিয়োজিত তিনি। বাস্তবে বিয়েই করেননি তিনি। অথচ ‘স্ত্রীর’ নামে সরকারের তহবিল থেকে নিয়েছেন অতিরিক্ত বিমান ভাড়া। এতে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৮ টাকা।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ৯টি দূতাবাসের হিসাব নিরীক্ষায় সরকারের দূতাবাস অডিট অধিদফতরের এক রিপোর্টে সোহেলের এমন অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। কর্মচারী সোহেল ছাড়াও অতিরিক্ত বিমান ভাড়া, দৈনিক ভাতা, ট্রানজিট ভাতা এবং টার্মিনাল চার্জ নিয়েছেন আরও ২৪ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের এমন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সরকারের ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪৩৫ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায় করে সরকারের কোষাগারে জমা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

অডিট রিপোর্টে বলা হয়েছে, কর্মচারী সোহেল গাজীর পাসপোর্টের কপিতে স্ত্রীর নামের জায়গায় প্রযোজ্য নয় উল্লেখ রয়েছে। তাতে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি অবিবাহিত। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত নথিতে তার স্ত্রীর পাসপোর্টের কপি ও বিমানের টিকিট পাওয়া যায়নি।

সে আলোকে বিবাহিত না হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর জন্য ছয় দিনের যোগদানকালীন দৈনিক ভাতা ও বিমান ভাড়া গ্রহণ করেছেন, যা আদায়যোগ্য। এতে সরকারের ৩ হাজার ৮৪০ দশমিক ১৮ মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন লাখ ২৪ হাজার ৩৬৮ দশমিক ৩৪ টাকা।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়কালের আর্থিক বিষয়ে নয়টি দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর অডিট পরিচালনা করা হয়।

অডিটে দেখা যায়, ওই দূতাবাসগুলোর ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের যাতায়াতে সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিমান ভাড়া, দৈনিক ভাতা, ট্রানজিট ভাতা এবং টার্মিনাল চার্জ নেন।

এ ছাড়া ৯ দূতাবাসে অনিয়মিতভাবে প্রাপ্যতাবিহীন অতিরিক্ত বিমান ভাড়া, দৈনিক ভাতা, অতিরিক্ত ট্রানজিট ভাতা ও টার্মিনাল চার্জ গ্রহণ করায় সরকারের ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪৩৫ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।