মিজানুর রহমান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে মন্দাবস্থার মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডে গতি ফিরেছে। অন্যদিকে আর্থিক খাতের ব্যাংক, বীমা ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান পড়েছে চরম দুরবস্থার মধ্যে। সার্বিকভাবে পুঁজিবাজার নিন্মমুখী অবস্থায় পড়লেও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ বেড়েছে। যদিও দীর্ঘ সময় ধরেই পুঁজিবাজারের মৌলভিত্তিক এই খাতটি পিছিয়ে ছিল।

মিউচুয়াল ফান্ডে আস্থা ফিরিয়ে আনতে এ খাতে লভ্যাংশ আকারে আরআইইউ (প্রচলিত অর্থে বোনাস) প্রদান করার আইন বাতিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বে-মেয়াদি এবং মেয়াদি উভয় ফান্ডকেই এখন থেকে লভ্যাংশ হিসেবে ক্যাশ ডিভিডেন্ড প্রদান করতে হবে। আজ অনুষ্ঠিত কমিশনের ৬৯৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, বে-মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে মেয়াদি ফান্ডের মতো উদ্যোক্তার অংশ ফান্ড গঠনের তারিখ হতে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ এবং পরবর্তীতে উক্ত ধারণকৃত অংশের ১০ শতাংশ ফান্ডের অবসায়ন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। এতে এতোদিন মেয়াদি এবং বে-মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে যে ভিন্নতা ছিলো তা দূর হবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। খেলাপি ঋণ ও পর্যাপ্ত আমানত না আসায় তারল্য সংকট কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংক। আর নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূলত ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করায় তারাও আর্থিক সংকটে পড়েছে। তারল্য সংকট কাটাতে স¤প্রতি পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমায় ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক্সপোজার সীমায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনগত ছাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ছাড় পেয়েছে। তবুও পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট কাটছেই না। ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ৩৭টি কোম্পানির মধ্যে অধিকাংশ ইউনিটের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে অর্থাৎ ১০ টাকার কম।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমায় সক্ষমতা বাড়ার কথা থাকলেও কার্যত সেটা হচ্ছে না। কারণ ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। সংকট না কাটায় পুঁজিবাজারেরও কোনো উন্নতি হচ্ছে না।’

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘আস্থাহীনতা থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও শেয়ার বিক্রির চাপ রয়েছে। সব মিলিয়ে বাজারে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পুঁজিবাজার ভালো অবস্থায় যাবে।