দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশে অর্থনীতির অবস্থা ভালো, এর প্রভাব তো শেয়ারবাজারের পড়ার কথা। কিন্তু তা পড়ছে না কেন সে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে কাজ করছে সরকার। এ জন্য বাজেটে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতেও পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের তরফ থেকে যা যা করা দরকার করা হবে।

এক সপ্তাহ আগেও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘দেশের পুঁজিবাজারকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করাতে কাজ করছে সরকার। বাজার নিজের পায়ে দাঁড়াবে, পুঁজিবাজার ভালো হবে।’ কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) পুঁজিবাজার নিয়ে কোনো মন্তব্য করেত চাননি তিনি।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে আমাদের কন্ট্রোলিং এজেন্সি আছে, ওখানে যান, আলোচনা করেন।

কারণ গত এক সপ্তাহে মোট পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন দিন সূচক বেড়েছে আর দু’দিন কমেছে। আর তাতে ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে দুই হাজার ১৮০ কোটি টাকা। দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীরা মতিঝিলের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন। তারা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ ১৬ দফা দাবি জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘পুঁজিবাজারকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করাতে কাজ করছে সরকার। এ জন্য বাজেটে নানা উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।’

শেয়ারবাজারে লাভ-লোকসানের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ পুঁজিবাজারে সরকারের শেয়ার খুব কম রয়েছে। এখান থেকে সরকার শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যাবে এমনটি নয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘পুঁজিবাজার একটি বাজার। এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। তবে লাভও হতে পারে আবার লোকসানও হতে পারে। সব দেশেই পুঁজিবাজারে মাঝে মধ্যে শেয়ারের দাম কমে। এখন একটা ট্রেড দাম চলছে। সেটা খুব বেশি দিন থাকবে না। আগে যে অস্বাভাবিক অবস্থা ছিল, সেটা আর নেই।

১৯২৯-৩৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে একবার ট্রেড ওয়ার হয়েছিল। সে সময় ২০ হাজার আইটেমের ওপর ট্যারিফ বসানো হয়েছিল। এ কারণে বিশ্বে তখন প্রায় ৬৬ শতাংশ বাণিজ্য কম হয়েছিল। কিছু দিন আগে চায়না-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটা সমস্যা সৃষ্টির কারণে ৪-৫ শতাংশের মত ট্রেড কমে গেছে। এ বিষয়গুলো অনেক সময় পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে। তবে সমস্যা দ্রুত সমাধান হয়ে আসছে।’

‘সব দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম কমে আবার বাড়ে। তবে পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নজির নেই। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভারতের পুঁজিবাজারের ইনডেক্স ১৮ হাজার থেকে ৭ হাজারে নেমে এসেছিল। সেখানে কমেছে, আবার বেড়েছে। আমাদের এখানেও বেড়েছে, আবার কমেছে। আমাদের পুঁজিবাজারে এখন খুব বেশি ওঠা-নামা নেই।

স্থিতিশীল রয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের যেটুকু করার, সেটুকু করা হবে। আমাদের অর্থনীতি খুব শক্তিশালী, এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। পুঁজিবাজারে এটার প্রভাব আশা উচিত। পুঁজিবাজারে শক্তিশালী বা বড় বিনিয়োগকারী ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থাকা দরকার। তবে আমাদের পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যাই বেশি,’ যোগ করেন মন্ত্রী।