দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সহায়তা চান ডিএসইর প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান। এতে বলা হয়েছে, কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা সংশোধনের ধারা অব্যাহত থাকায় স্বল্পসংখ্যক বিনিয়োগকারী ডিএসই’র সামনে ব্যানার, ফেস্টুন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন।

এ বিক্ষোভের ফলে দেশ ও বিদেশে আমাদের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। পুঁজিবাজারের ধর্মই হলো উত্থান ও পতন। পুঁজিবাজারের ব্যাপ্তি বেড়েছে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এ বাজারকে প্রভাবিত করতে পারবে সে ধারণাও সঠিক নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে এর চেয়েও বেশি উত্থান-পতন হয় উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সেখানে কখনও ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন অথবা বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় না।

বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ উদীয়মান পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হোক তা আমাদের কাম্য নয়। এ ধরনের বিক্ষোভের ফলে নতুন বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে আসার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে অনুৎসাহিত হয়।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দীর্ঘমেয়াদে একটি গতিশীল পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে ব্যাপক সংস্কারমূলক কাজসহ প্রয়োজনীয় আইন-কানুন প্রণয়ন করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও সব ধরনের প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। সবই করা হচ্ছে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে। আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলে থাকেন ‘পুঁজিবাজারের মাধ্যমেই দেশের শিল্পায়ন ও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা সম্ভব।

একইসঙ্গে শিল্পায়নের মাধ্যমে অধিকহারে কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়।’ তাই বিনিয়োগকারীদের অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে দেশের উদীয়মান পুঁজিবাজারকে কাজে লাগিয়ে নিজের এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কোনরূপ অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে একযোগে কাজ করার জন্য সবার কাছে আহবান জানানো হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়ে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে পুঁজিবাজারের মতো স্পর্শকাতর অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখার জন্য।

গণমাধ্যমের বিষয়ে এতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে গণমাধ্যমের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দিনে দেশের গণমাধ্যম পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। গণমাধ্যমই পারে সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে। কিন্ত সা¤প্রতিক সময়ে কিছু গণমাধ্যমে ‘বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা মূলধন উধাও ও পাচার’ এ ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। যা প্রকৃত অর্থে সঠিক না বাজারের সিকিউরিটিজের মূল্য উঠা-নামার সঙ্গে বাজার মূলধন বাড়ে বা কমে।

বাজার মূলধন কমা-বাড়ার সঙ্গে টাকা উধাও বা পাচার হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের নেতিবাচক প্রচারে পুঁজিবাজার সম্পর্কে দেশ-বিদেশে এক ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ে। পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সম্মানের সহিত গণমাধ্যমের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে, এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত না করতে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আশা করে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে গণমাধ্যম বিগত দিনের মতো সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।