দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে ব্যাংকগুলোকে বড় ধরনের ছাড় দেওয়ায় আস্থা সঙ্কটে থাকা পুঁজিবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়তে শুরু করছে। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ পর ইতিবাচক ধারায় ফিরল তালিকাভুক্ত বড় মূলধণি কোম্পানির শেয়ারদর। মৌলভিত্তির এসব কোম্পানির শেয়ারদর হারানোয় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের তারল্য বৃদ্ধির সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। এর ফল পেতে শুরু করেছে বিনিয়োগকারীরা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বেড়েছে। ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে আগের সপ্তাহে নেতিবাচক প্রবণতায় শেষ হওয়া তিন সূচক। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার বেশি। ডিএসইর সাপ্তাহিক তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।

তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে উল্লেখ করা হয়, পৃথক বিও হিসাব চালু করে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। এজন্য সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে ঋণ দিতে পারবে।

প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকেও অর্থ ধার নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। যদিও ব্যাংকগুলোকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে মাত্র। এখন ব্যাংকগুলো ইচ্ছা করলেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। বিনিয়োগকারীরা ধরে নিয়েছেন, এখন ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে। এতে বাজারে থাকা প্রায় সব ধরনের শেয়ারদর বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বড় মূলধনি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে বড় মূলধনি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের শেয়ারদর নেতিবাচক ধারায় শেষ হয়েছে। এটি বাদে সব বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর ইতিবাচক ধারায় শেষ হয়।

তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আগের সপ্তাহের চেয়ে তিন দশমিক দুই শতাংশ বেড়েছে। বড় মূলধনি খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ সাত দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ দর বেড়েছে টেলিকম খাতে। বড় মূলধনি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ার প্রভাব অন্যান্য খাতের শেয়ারদরেও পড়েছে। ফলে সপ্তাহ শেষে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদরও বৃদ্ধি পেয়েছে। একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে ছিল গ্রামীণফোন। এর পরই চিল ন্যশনাল টিউবস ও ফরচুন শুজ।

একক কোম্পানি হিসেবে শেয়ারদর বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০টির প্রথম অবস্থানে উঠে এসেছে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বশেষ ৩৬ টাকা ১০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহব্যাপী শেয়ারটি সর্বমোট ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা লেনদেন করে, যা গড়ে প্রতিদিন সাত কোটি ৬৬ লাখ ১১ হাজার ৮০০ টাকা।

এর পরই রয়েছে মুন্নু সিরামিক, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স ও ব্যাংক এশিয়া।