দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মামলার ভয়কে দূরে ঠেলে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শেয়ারবাজারে পুঁজি হারানো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে প্রায় দুই মাস পর গত মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন বিনিয়োগকারীরা। পতনের ধারা অব্যাহত থাকায় গতকালও বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে আগের মতোই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদ থেকে খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করা হয়। একই সঙ্গে ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের শাস্তির দাবি জানান বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি ‘জেড’ ক্যাটাগরি এবং ওটিসি মার্কেটের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণসহ বেশকিছু দাবি জানানো হয়। এর আগে দরপতনের প্রতিবাদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করলে গত ২৭ আগস্ট ডিএসইর পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

ডায়েরিতে বলা হয়, ২৭ আগস্ট আনুমানিক দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পুঁজিবাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯-১০ জন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের সামনে ব্যানার ও মাইকসহ বিক্ষোভ করে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াত এবং অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম সম্পাদনে বিঘ্ন ঘটে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বেশ কিছুদিন ধরে তারা এ ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছে এবং পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে সম্মান হানিকর মন্তব্য করছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ মনে করে এ ধরনের কার্যকলাপ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং বহির্বিশ্বে দেশের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। ফলে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে- বলে সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিএসইর পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হলে বন্ধ হয়ে যায় বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ। তবে শেয়ারবাজারে চলতে থাকে দরপতন। দরপতনের ধারা সম্প্রতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এ পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে আবারও বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবারের ধারাহিকতায় বৃহস্পতিবারও বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, আমরা বিনিয়োগ করা পুঁজি প্রতিনিয়ত হারাচ্ছি। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কোনো মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের আটকে রাখা যাবে না। আমরা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত দেখবো। এরপরও যদি বাজার ভালো না হয় তাহলে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এ দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের প্রধান দাবি বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ। কারণ খায়রুল হোসেনকে বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না। পাশাপাশি আমরা আরও কিছু দাবি জানিয়েছি। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলে শেয়ারবাজার অবশ্যই ভালো হবে।