দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : হঠাৎ করেই দেশের পুঁজিবাজারে ‘জেড’ গ্রুপের দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বেড়েছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে জেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অংশ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে যে লেনদেন হয় তার ৩ দশমিক ৭১ শতাংশেই ছিল ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের।

আগের সপ্তাহে মোট লেনদেনে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অংশ ছিল ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। পচা কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন বাড়লেও লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়। যে কারণে ডিএসইর সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৬টির দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ২০৪টির। অপরিবর্তিত ছিল ১৫টির দাম। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে মূলধন হারিয়েছে ডিএসই। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৯২ কোটি। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা।

এদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮৯ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৪৭ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ২০ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ।

সব সূচকের পতন হলেও সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। তবে গড় লেনদেন তিন’শ কোটি টাকার ঘরেই আটকে আছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয় ৩৩৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩০৯ কোটি ১১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বাড়ে ২৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৭৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১২৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ ছাড়া লেনদেনে ‘বি’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়েয়েছে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। ‘এন’গ্রুপের অবদান দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয় ৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

৪৩ কোটি ৯৬ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্টাইল ক্রাফট। লেনদেনে এরপর রয়েছে: স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, মুন্নু সিরামকি, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, নর্দান জুট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল এবং মুন্নু জুট স্টাফলার্স।