দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : ক্ষুদ্র ঋণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলা হলেও ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন হয় না, বরং দারিদ্র্য লালন-পালন করা হয়। তিনি বলেন, এর প্রমাণ আমরা দেখেছি। চক্রবৃদ্ধি সুদের নিচে চাপা পড়ে বহু মানুষ নিঃস্ব হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাত দিনব্যাপী পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যববস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ।

কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল, আমরা দেখেছি ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কেউ কেউ খুব বাহবা নেয়ার চেষ্টা করেছেন। দেশ বিদেশে অনেক নামও কুড়িয়েছেন। … একসময় আমরাও এটাকে সমর্থন দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এর ফলে বোধ হয় মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে পারবে। কিন্তু যখন আমরা বিষয়টা আরও গভীরভাবে দেখলাম, তাতে দেখলাম, আসলে এর মাধ্যমে ঠিক দারিদ্র্য বিমোচন হয় না, দারিদ্র লালন-পালন হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে কেউ কেউ ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা সেজে অনেক ভালো নাম করে ফেলেছেন। কিন্তু দেখা যায় যে হয়তো নিজে নাম কামিয়েছেন, কিন্তু দেশের মানুষ ততটা তার সুফল পেতে পারেননি। এটা হলো বাস্তবতা। বরং চক্রবৃদ্ধি সুদের ঘানি টানতে গিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষকে কীভাবে সমবায়ের মাধ্যমে একত্রিত করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে কীভাবে তাদের দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা যায়, সেই পরিকল্পনাটাই জাতির পিতা নিয়েছিলেন। আর দারিদ্র্য বিমোচনে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় একটা প্রচেষ্টা নিয়েছি। দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে কী কী কাজ করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমাদের কর্ম পরিকল্পনা নিই। আমাদের মূল শত্রু হচ্ছে দারিদ্র্য। কাজেই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। দারিদ্র্যের হাত থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কর্মপরিকল্পনা।

উল্লেখ্য, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্যপ্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল এ মেলায় স্থান পায়।