দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : পুঞ্জিভূত লোকসানে থাকা কোম্পানি বোনাস শেয়ার দেয়ার বিধান না থাকলেও লঙ্ঘন করে লভ্যাংশ দিয়েছিলো পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড। বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নজরে আসলে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লোকসান থাকার পরও আইন লঙ্গণ করে ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড। ডিএসইতে প্রকাশ করা হয়েছে তাদের লভ্যাংশের খবর। এর পর থেকে হুর হুর করে বাড়তে থাকে কোম্পানির শেয়ারের দর। এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সঙ্কা তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। বিনিয়োগকারীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেই জন্য বোনাস লভ্যাংশের উপর নিষেধাঙ্গা জারি করে কমিশন।

ইতোমধ্যে কোম্পানিটির বোনাস শেয়ার সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি কোম্পানিটির গত ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) চূড়ান্ত অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত বোনাস শেয়ার ক্রেডিট না করার জন্য সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ (সিডিবিএল) নির্দেশ দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি বলছে, কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে। যা বিএসইসির আইনের পরিপন্থি। তাই কোম্পানির সদ্য সমাপ্ত বছরের এজিএমে চূড়ান্ত অনুমোদন না হওয়ার আগে এ বোনাস শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের বিও হিসাবে ক্রেডিট না করার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে।

গত ২ অক্টোবর প্রকাশিত বিএসইসির ওই নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেসব কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে; তারা এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবে। কোম্পানিগুলোর এমন পুঞ্জীভূত লোকসান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের অর্জিত মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবে। বিনিয়োগকারী ও শেয়ারবাজারের স্বার্থে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা ও বিতরণ সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন ২০১৮ সালের ২০ জুন প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে বোনাস শেয়ারসংক্রান্ত আরো একটি নোটিফিকেশন চলতি বছরের ২৩ মে প্রকাশ করা হয়। ব্যাখ্যায় বলা হয় ‘অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহ পুঞ্জীভূত লোকসান বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট বছরের অর্জিত মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ, ঘোষণা ও বিতরণ করতে পারবে।’

কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটির মোট রিজার্ভ রয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ সুপারিশ করে। এসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২৮ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য হয়েছে ১৪ টাকা ৬১ পয়সা। ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ শেয়ার এবং ৬৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।