দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আস্থা ফেরানোর নেপথ্যে কাজ করছে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা জয়-লেখক। ইতিমধ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই দুই শীর্ষ নেতা। জয়-লেখকের বক্তব্য যেকোন মূল্যে ছাত্রলীগের সোনালী সুদিন ফিরে আসবে। আর এই সুদিন আনতে আমরা জীবনবাজী রেখে কাজ করতে প্রস্তুত। (আপা) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা বিশ্বাসের সাথে পালন করবো। তবে আপনারা সাংবাদিকরা ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ না করে ইতিবাচক সংবাদগুলো তুলে ধরুণ। আমাদের বিশ্বাস আপনাদের মাধ্যমে ছাত্রলীগের সুদিন ফিরে আনবো।

উল্লেখ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে শীর্ষ দু’নেতার প্রত্যাহারের পর ইমেজ সংকটে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এরপর থেকেই ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্বে চলছে সংগঠনটি। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নানান সমস্যা পেছনে ফেলে সংগঠনকে নতুনভাবে গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছে শীর্ষ দু’কাণ্ডারি। ফলে ব্যর্থতা গ্লানি উতরিয়ে নতুন প্রত্যয়ে সংগঠিত হয়েছে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ এ সংগঠনটি। ফলে শোভন-রাব্বানীর পর অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতাকর্মীরাও আস্থা ফিরে পাচ্ছেন নতুন নেতৃত্বের উপরে।

চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে। আকস্মিক পরিবর্তনে নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা, অনিশ্চয়তা এবং বিভিন্ন ধরনের অনিশ্চয়তায় জর্জরিত হতে থাকে নতুন নেতৃবৃন্দরা।

দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নতুন নেতৃত্ব সংগঠনে বেশকিছু পরিবর্তন এনেছেন। তথাকথিত ‘প্রটোকল রাজনীতি’ ‘অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং’সহ বিভিন্ন সমস্যার দৃশ্যমান সমাধান হয়েছে। এছাড়াও দলকে আরও নতুনভাবে তরুণ সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সকলের সাথে দলের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা এবং পরামর্শ করে দল সাজাচ্ছেন এই দুই দলপতি।

ইতোমধ্যে, ছাত্রলীগের মঙ্গলের স্বার্থে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় এবং বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় বেশকিছু ছাত্রলীগের নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমান কমিটিতে থাকা বিতর্কিত ১৯টি পদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। চলতি মাসের মধ্যেই বিষয়টি সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন জয়-লেখক। এছাড়াও দলের পদবঞ্চিত বিদ্রোহীদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করে একই প্লাটফর্মে এনে কাজ করার নিয়ম চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা।

পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব এবং দলের মধ্যে বিশৃংখলাকারীদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য হল পর্যায়ে নেতৃত্ব যাচাই-বাছাই চালাচ্ছেন এবং খুব শীঘ্রই একটি সম্মেলনের মাধ্যমে হল কমিটি দেওয়ার জন্য কাজ করছেন তারা।

বিজয় একাত্তর হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং ছাত্রলীগের হল কমিটিতে পদ প্রত্যাশী নাজমুল হাসান নিশান বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপরে আমাদের শতভাগ আস্থা আর বিশ্বাস রয়েছে। জয় আর লেখক যেভাবে নিরলসভাবে কাজ করছেন, আমার বিশ্বাস তাদের হাত ধরে ছাত্রলীগ ইতিবাচক রাজনীতির স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাবে।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, দলের ভালো-মন্দ সব দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের সংগঠন পরিচালনা করতে হয়। আমরা দলের নেতিবাচক সমস্যাগুলো সমাধান এবং সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে দল গঠনের চেষ্টা করছি। যাতে আবার ছাত্রলীগের সেই ইতিহাস ও গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারি।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একটা চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি। অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের ১১১ টি ইউনিটের মধ্যে দুটি ইউনিটের কাজ আগের কমিটি থেকে করা হয়েছে। আমরা আশার পরে আরও আরেকটি জেলা কমিটি দিয়েছি। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে যেখানে দেখা যায় প্রায় অনেক বছর যাবত কমিটি নেই। সেসব জায়গা চিহ্নিত করে কাজ করছি। এর মধ্যে চারটি জেলায় কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা চারটি জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়েছি।