দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। এর মধ্যে কোম্পানিটি মুনাফা নিয়ে নানা লুকোচুরি ধরা পড়ছে। কোম্পানিটি দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সঠিক তথ্য আর্থিক প্রতিবেদনে উপস্থাপন করেনি। আয়কর আইন লঙ্ঘন করে মুনাফা বেশি দেখিয়েছে। ফলে কোম্পানির বছর শেষে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) অতিরিক্ত বেড়েছে। একই সঙ্গে কোম্পানিটি শ্রমিক কল্যাণ তহবিল নিয়েও নানা অনিয়ম রয়েছে। এসব বিষয়ে কোম্পানির নিরীক্ষক আপত্তি জানিয়েছেন।

কোম্পানির নিরীক্ষক জানান, কোম্পানির ২৩ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ আছে বলে জানিয়েছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে ২০১৯ সালের জুন শেষে কোম্পানির বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির ১ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা দায় দেখায়নি। এর ফলে কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ইপিএস বৃদ্ধিতেও প্রভাব পড়েছে।

নিরীক্ষক জানায়, রূপালী ব্যাংকে ২০১৯ সালের জুন শেষে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ২৩ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিল বলে কোম্পানি তথ্য দিয়েছে। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২০ কোটি ৮৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী গত ৩০ জুন শেষে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর্থিক প্রতিবেদনে ঋণ কম দেখানো হয়েছে। এ ঋণ রি-সিডিউলের আবেদন করেছে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার। কোম্পানিটি ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রভিশন রাখেনি। কোম্পানির প্রভিশনিং ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। যা কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

এদিকে, কোম্পানিটি বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) পরিপালন করেনি। শ্রম আইন পরিপালনের ব্যর্থ হওয়ার মাধ্যমে কোম্পানিটি আইনের ২৩৪ ধারা লঙ্ঘন করেছে। এসব নানা অসঙ্গতি নিরীক্ষক তার মতামত তুলে ধরেছেন।

লিগ্যাসি ফুটওয়্যার পুঁজিবাজারে ২০০০ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছে। নানা সংকটে কোম্পানিটি দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠার পর গত দুই বছর ধরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬২ দশমিক ৬১ শতাংশ।