দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে কোম্পানিটির সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরে কর পরবর্তী মুনাফা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নোটিফিকেশন লঙ্ঘন করেছে। আর এসব বিষয়ে কোম্পানির নিরীক্ষক আপত্তি জানিয়েছেন।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, একটিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বিদ্যমান কর ও বিলম্বিত করের প্রভিশনের বিষয়টি আর্থিক বিবরণীতে প্রকাশ করেনি। ফলে কোম্পানিটি আইএএস লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া ২০১৮ সালের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল একটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) এবং ল্যাবরেটরি রি এজেন্ট প্রডাকশন অ্যান্ড এক্সপোর্ট পলিসি শিরোনামে কোম্পানিটির করপোরেট কর অবকাশের বিপরীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে এসআরও জারি করেছে তা কার্যকর করেনি। এসব কারণে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফা এবং শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত কর দিয়েছে বলে উল্লেখ্য করেছে। এছাড়া গত ৩০ জুন বিলম্বিত কর দায়ের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৪৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আগের বছর তা একই ছিল। অথচ কোম্পানিটির ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০৩১-৩২ পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে জানালেও এনবিআর এসআরও কার্যকর করেনি। ফলে আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির আয় ও কর আইএএস অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়নি। একইসঙ্গে আর্থিক ব্যয় আইএএস অনুযায়ী হিসাব করেনি কোম্পানিটি। এসব বিষয় নিয়েই নিরীক্ষক আপত্তি জানিয়েছেন।

নিরীক্ষক আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জারি করা ২০১১ সালের নোটিফিকেশন অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোম্পানির উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন, যা বিএসইসির নোটিফিকেশন লঙ্ঘন।

পুঁজিবাজারে ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮০টি। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১ দশমিক ৯২ শতাংশ, বিদেশিদের কাছে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫২ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানি ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গতকাল কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ১৪ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।