দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন কাল শুক্রবার শুরু। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্রগুলো বলছে, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা পরবর্তী কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। তবে কারা নতুন নেতা হচ্ছেন, পুরোনো কে কে বাদ পড়ছেন, সে বিষয়ে এখনো সবাই অন্ধকারে। এ জন্য পদপ্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা নেতারা উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই থাকছে এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কি না, এটাই এখন মূল আলোচনার বিষয়। এ পদে পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত আছে কি না, দলে নতুন কে আসছেন, কারা বাদ পড়ছেন এসব বিষয়ে ধারণা পেতে নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

সম্মেলন প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, গঠনতন্ত্রে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসছে না। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খ্যা ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের অর্জনগুলো ঘোষণাপত্রে যুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা আছে দীর্ঘদিন ধরেই। তবে এবারও শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় বা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনার কোনো ইঙ্গিত এখনো দেননি দলীয় প্রধান।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাল শুক্র ও শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবার দলের প্রায় ১৫ হাজার কাউন্সিলর এবং প্রতিনিধি অংশ নেবেন। তাঁদের বাইরেও দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত এবং খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে আ’লীগের দু:সময়ের কান্ডারী বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। যিনি গত তিন বছরে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করছেন। আওয়ামী লীগকে প্রথম বিশ্ব দরবারে ব্যতিক্রমী পরিচিতি এনে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন দলটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জনপ্রিয় মেধাবী ছাত্রনেতা এবং বর্তমানে দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটিরও সদস্য সচিব। তারই নেতৃত্বে দলটি জাতিসংঘ ওয়ার্ল্ড এনভায়রম্যান্ট ডে হিরো স্বীকৃতি অর্জন করে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন।

তাঁর কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বজুড়ে যেসব নেতা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সবচেয়ে সোচ্চার তাদের মাঝে অন্যতম। অনেক দিক থেকেই এইক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সক্ষমতা তৈরিতে বাংলাদেশকে এখন রোল মডেল বলছে বিশ্বব্যাংক, প্রশংসা করছে আরো বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন। তবে সরকারি পর্যায়ে কাজ অব্যাহত থাকলেও দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন হিসেবে তৃণমূল পর্যায়েও সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। এইজন্য বিশেষজ্ঞ সেমিনার থেকে, স্কুল-কলেজ পর্যায় পযন্ত জনসচেতনতা তৈরিতে সক্রিয়।

তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবেশ রক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল। যে দলটি মানুষের তরে দেশ গড়তে পারে। আর দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে নেতা-কর্মীদের হতে হবে নিবেদিত প্রাণ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের লড়াই-সংগ্রামের মূলকথাই ছিলো মানবতার কল্যাণে জননিবেদিত একদল নেতা নামক জনসেবক তৈরি করা।

যারা তার আদর্শকে লালন-পালন করে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে দেবে। দেলোয়ার হোসেনরা মানুষের কল্যাণে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে প্রমাণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শের অনুসারীরা এখনও পারে এবং তাদের পারতেই হবে। মূলত বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী স্বপ্নের এ সোনার মানুষরাই এভাবেই দলকে একটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সারা দুনিয়ায় অনন্য নজির হিসেবে দাঁড় করিয়ে মানবতার জয়গানে মুখরিত করে তুলবে।

এখানে উল্লেখ্য, জাতিসংঘ প্রতিবছর ৫জুন সারা বিশ্বে পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করে থাকে। পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক শাখা ইউনাইটেড নেশন এনভায়রম্যান্ট প্রোগ্রাম ওয়ার্ল্ড এনভায়রম্যান্ট ডে হিরো স্বীকৃতি দেয়। সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৯ উদ্যাপন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল বায়ু দূষণ ও করণীয় পদক্ষেপ শীর্ষক সেমিনার, বৃক্ষরোপণ, রচনা, আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রতিযোগিতা এবং সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি ইউনাইটেড নেশন্স এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম গ্রহণ করে ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ডে হিরো স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখায় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটিকে জাতিসংঘ থেকে ধন্যবাদপত্র দেওয়া হয়। গত তিন বছরে পরিবেশ ঝুঁকি মোকাবেলায় দেশজুড়ে কাজ করে বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি। সারাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রায় ৪ কোটি মানুষকে পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য কাজ করেছে এ কমিটি?

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দেলোয়ার হোসেন দলের দু:সময়ে কান্ডারী। দলকে শক্তিশালী করতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। বিগত সময়ে চারদলীয় জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা প্রশংসনীয় ছিল বলে নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। এছাড়া পরিবেশ সচেতনতা সৃষ্টিতে বিশ্বজুড়ে সোচ্চার শেখ হাসিনা, তাঁর নেতৃত্বে বাসযোগ্য বাংলাদেশ তৈরিতে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানালেন আ.লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলেয়ার হোসেন।

আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেইন একান্ত সাক্ষাৎকালে গত তিন বছরে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সফলতার নানা গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের সারা দেশজুড়ে কর্মী ও সক্রিয় সমর্থকদের সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ কোটি। এরা বহু পেশায় জড়িত। সাংগঠনিকভাবে আমরা প্রথমেই নিজেদের কর্মীদের মাঝে সচেতনতা তৈরির কাজ করি।

জেলা,উপজেলা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল কমিটি মিলিয়ে আমার নিচে পরিবেশ বিষয়ক স¤পাদক আছেন আরো ২০ হাজার জন। এরা সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছেন। এইক্ষেত্রে আমাদের মূল গাইডলাইন হলো আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার। জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি বাসযোগ্য, দূষণমুক্ত ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছিলেন জনগণের কাছে। এজন্য সরকারি পর্যায়ে যেমন কাজ হচ্ছে, দলীয় পর্যায়েও আমরা সীমিত সক্ষমতার মধ্য দিয়ে কাজ করছি।