দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: সার্বিক প্রস্তুতি শেষে অন্তত ৫ হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল ছেড়েছেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। ৫টি বিশালাকারের লঞ্চযোগে এই যাত্রা পূর্বে লোকসমাগমে ‘চলচল ঢাকায় চল’ শ্লোগানে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ব করা হয়। প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়াও পেয়েছেন বলে শোনা গেছে।

এই সফরকে ঘিরে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র সাদিকের পরিকল্পনা সম্মলনস্থলে বিশাল কর্মী-সমর্থক বাহিনীর উপস্থিতির মাধ্যমে চমক সৃষ্টি করে বরিশাল রাজনীতি ও সাংগঠনিক শক্তি কেন্দ্রে জানান দেওয়া। দুই দিনের এই ঢাকা সফরে বৃহহস্পতিবার গভীর রাতে রওনা প্রাক্কালে বরিশাল নৌবন্দরে আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের জনস্রোত দেখা দেখা যায়। এই সফরের শুরু এবং শেষ কীভাবে ঘটে এটাই এখন বরিশাল রাজনীতির আলোচনার বিষয়।

সাংগঠনিক সূত্রগুলো বলছে- মহানগর আ’লীগের নতুন নেতৃত্ব পাওয়ার পর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ ঢাকার দলীয় সম্মেলনে শো-ডাউন দেওয়ার পরিকল্পনা নেন। বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থক ঢাকামুখী করতে গত এক সপ্তাহ যাবত ওয়ার্ড ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু করেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এই কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা যেতে ইচ্ছুকদের তালিকা ও তাদের ছবিসহ বায়োডাটা সংগ্রহ করা হয়।

সতর্ক দৃষ্টি রাখে অন্য কোন দলের বহিরাগতরা যেন এই ঢাকার কাফেলায় অনুপ্রবেশ করতে না পারে। ৩০টি ওয়ার্ড থেকে ইতিমধ্যে প্রত্যাশা অনুযায়ী দলীয় কর্মীদের সাথে সমর্থকেরা একত্রিত হয়েছে। তাদের সাথে ১০ উপজেলার নেতাকর্মীরা বরিশালে এসে একই মোহনায় মিলিত হয়েছেন। প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে সফর সঙ্গীর পরিচয়পত্র। যা দেখিয়ে লঞ্চে প্রবেশ অনুমতি মিলবে।

৫ হাজার লোকের টার্গেট নেওয়া হলেও জেলা মহানগরের সমন্বয়ে লোকসমাগম আরও অধিক হতে দেখা যায়। এই বিশাল কর্মী বাহিনীর যাবতীয় খরচ মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ নিজেই বহন করছেন। পাশাপাশি সম্মেলনে যাওয়া এবং ফিরে আসা পর্যন্ত সকলের নিরাপত্তা ও খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিতে তার তত্ত্বাবধায়নে দায়িত্বশীল নেতাদের বিভিন্ন সেক্টর দেখভাল করার দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দুই দিনের এই সম্মেলনে প্রথম দিনের অধিবেশন শেষে কর্মী-সমর্থকেরা বরিশাল ফিরে আসার কথা রয়েছে। তাদের সাথে থাকা বরিশাল জেলার ১০৮ জন এবং মহানগরের ১৮ ডেলিগেট ঢাকায় অবস্থান করে কাউন্সিলে তাদের ভোটাধিকার বা মতামত রাখার কথা রয়েছে।

জানা গেছে- নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এই বিশাল বহর ঢাকায় নেমে সম্মেলনমুখী রাজপথে আওয়াজ তুলতে পারেন সাদিক আব্দুল্লাহ’র সমর্থন সংবলিত নানা শ্লোগানে। এমনটি চাচ্ছেন মেয়র সাদিকসহ তার কুশীলবরা। বরিশাল আ’লীগের এই দায়িত্বশীল নেতা স্থানীয়ভাবে ইতিপূর্বে সাংগঠনিক সভা-সমাবেশে ব্যাপক সংখ্যক লোকসমাগম রেকর্ড সৃষ্টি করায় জাতীয় সম্মেলন অনুরুপ নেতাকর্মী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ঢাকা থেকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। যদিও সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল মহানগরের সম্মেলন সফলের পরপরই এই বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র ইঙ্গিত দেয়- বরিশাল রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা ও সংগঠক হিসেবে নিজের অবস্থান কেন্দ্রে উপস্থাপনে সাদিক আব্দুল্লাহ জাতীয় সম্মেলনকে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে লুফে নিয়ে এক ধরনের শো-ডাউন দিয়ে চমক সৃষ্টি করে আলোচনার ধারাবাহিকতায় থাকতে চান।

মহানগর আ’লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, কোন চমক নয়, জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসহ উদ্দীপনা দেখা দেওয়ায় একটি আনন্দময় পরিবেশে সকলকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হচ্ছে।’