দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এবছর দলীয় মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে সেখানে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ফলে মনোনয়ন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন সাঈদ খোকন। রাজনীতিতে নতুন করে গুঞ্জন উঠছে সাঈদ খোকন কী রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন! দীর্ঘ ৫ বছর পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে আবারও দলের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ফলে এখন নিজ বাসভবনে স্বেচ্ছাবন্দি থেকে অনেকটা একাই সময় কাটাচ্ছেন।

নির্বাচন নিয়ে দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে। জানতে চাওয়া হয় দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন কিনা। উত্তরে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি ঢাকা দক্ষিণের এই মেয়র। অনেকটা হতাশাজনক ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘রাজনীতিতে অনেক কিছু হয়। নির্বাচন নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।’ জানান, বর্তমানে বাসায় সময় কাটাচ্ছেন।

মেয়র থাকাকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন এমন দাবি রয়েছে সাঈদ খোকনের। তবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আগ থেকেই কিছুটা হতাশায় ছিলেন তিনি। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর গণমাধ্যমে কথা বলার সময় তাকে কাঁদতে দেখা গেছে। তখন বলেছেন, জীবনের কঠিন সময় পার করছেন তিনি। তার অভিভাবক শেখ হাসিনা যেটা ভালো মনে করেন তার জন্য সেটাই করবেন। তবে দায়িত্ব পালনের বিভিন্ন সময় নানা মন্তব্যের কারণে তাকে নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হতে হয়েছে। রয়েছে সফলতাও। ঢাকার সড়কে এলইডি বাতি ও বিলবোর্ড, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প ও বেদখলে থাকা খেলার মাঠ ও পার্ক উদ্ধার করে আধুনিকায়ন করেছেন তিনি।

সাঈদ খোকন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। তিনি পুরান ঢাকার অন্যতম ব্যক্তিত্ব মাজেদ সর্দারের নাতি। বাবা মোহাম্মদ হানিফের হাত ধরেই সাঈদ খোকন রাজনীতিতে নামেন। তিনি আওয়ামী লীগে নাম লেখান ১৯৮৭ সালে ওয়ার্ড শাখার আইনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। ১৯৯৯ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০৪ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন। সর্বশেষ তিনি মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৬ ভোট পেয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ৬ মে তিনি মেয়র হিসেবে শপথ নেন।