দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলিতে শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক পদে টানা ৫ম বার একই পদে অধিষ্ঠিত হলেন হাবিবুর রহমান সিরাজ। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মেহনতি মানুষের আশা ভরসা ও আস্থার প্রতীক শ্রমিকবান্ধব নন্দিত হাবিবুর রহমান সিরাজ। বাংলাদেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় এ পদে তার উপর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আস্থা রেখেছেন দেশের কোটি কোটি শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বর্ষীয়ান এ শ্রমিক নেতা পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছেন মেহনতি মানুষের কল্যাণে।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন হাবিবুর রহমান সিরাজ। ৭ মার্চ এর বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক জনসভায় নরসিংদীর ঘোড়াশাল থেকে হাজার হাজার শ্রমিকদের সাথে নিয়ে রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে জনসভায় যোগদান ছিল চোখে পড়ার মত।

হাবিবুর রহমান সিরাজ আ’লীগের দু:সময়ে কান্ডারী। শ্রমিক লীগকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে তার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিগত সময়ে চারদলীয় জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা প্রশংসনীয় ছিল বলে নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। এটা সর্বজনস্বীকৃত যে, প্রধানমন্ত্রী যখন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কারাগারে বন্দী ছিলেন তখন নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে অগ্রনায়ক ছিলেন হাবিবুর রহমান সিরাজ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পর পর ৫ম বার শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছাড়াও তিনি শ্রমিক লীগের নেতৃত্বেও ছিলেন। বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের পুরোধা এ নেতা দেশের বাহিরেও একাধিকবার বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের কথা তুলে ধরেছেন একাধিক আন্তর্জাতিক সেমিনারে। একটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মুল শক্তির জায়গা হলো শ্রমিক ও মেহনতি মানুষ। এই মেহনতি মানুষের নন্দিত নেতা হাবিবুর রহমান সিরাজ কখনও নিজের ভোগ বিলাসের চিন্তা ভাবনা করেন নাই।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় তথাকথিত শ্রমিক নেতারা যখন হাজার হাজার কোটি টাকা অবৈধ ভাবে উপার্জন ও দেশের বাইরে পাচার করছে, চাঁদাবাজির দায়ে দেশ বিদেশে নিন্দিত তখন হাবিবুর রহমান সিরাজ পুরান ঢাকার একটি ছোট ভাড়া বাসায় কোনোরকমে সাধাসিধা জীবন যাপন করছেন।

আজকের এই বাংলাদেশ যে আজ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে আবির্ভূত হচ্ছে, যে দেশকে এশিয়ার অর্থনৈতিক টাইগার বলা হচ্ছে তার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান দেশের শ্রমিক ও মেহনতি জনগোষ্ঠীর। সেই শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী যার উপর আস্থা রেখেছেন বার বার, এই দায়িত্ব তার আগামী দিনের কর্ম পরিকল্পনায় আরো দায়িত্বশীল করে তুলবে।

শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কল্যান ও তাদের জীবনমানের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার এই লক্ষ্য হাবিবুর রহমান সিরাজকেও কম চ্যালেঞ্জে ফেলবে না। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ যে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে সেখানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাকে অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হবে।

২০২০ সাল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে পালিত হবে। জাতির জনক সর্বদা শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের পক্ষে সারা জীবন আন্দোলন ও সংগ্রাম করে গেছেন। তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, প্রাপ্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা এবং জীবন মানের উন্নয়ন করাই ছিল জাতির পিতার অন্যতম লক্ষ্য। মুজিব বর্ষে জাতির জনকের এই স্বপ্ন পুরন করাই হবে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির অন্যতম প্রধান কাজ।

যুগে যুগে মীর জাফররা আন্দোলন ও সংগ্রামে পিছন থেকে বেঈমানি করে এসেছে এখনও তাদের প্রতিনিধিরা রয়ে গেছে। বিশেষ করে শ্রমিক ও মেহনতি মানুষ এর লেবাস পড়ে যারা এতদিন হাজার হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে নিজের ও তার পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন করছে- সময় এসেছে এদের চিন্হিত করার। ২০২০ সালে মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সমস্ত বেইমানদের রাজনীতির মাঠ থেকে বিদায় দিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ নতুন দেশ উপহার দিবেন; এই প্রত্যাশা দেশবাসীর।