দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন,পুঁজিবাজার কিছু লোকের হাতে জিম্মি। এ কারণে পুঁজিবাজারে কোনো ভালো কিছু আশা করা যাচ্ছে না। পুঁজিবাজার নিম্নগতি থেকে উপরে ওঠার কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের আস্থা নেই। বিশেষ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কিছু ব্যক্তি এই বাজারকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। পুঁজিবাজারের গতি ফেরাতে যখনই কোনো জায়গা থেকে টাকা দেয়া হয়, ডিএসইর ওই ব্যক্তিরা টাকা মেরে দেয়। যে কারণে এই বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, গত দুই বছর ধরে একটি গ্রুপ সিন্ডিকেট শেয়ারবাজারে ভয়াবহ খেলায় মেতেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে তাকিয়ে দেখছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়েছে।

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে দেশ প্রতিক্ষণের সাথে আলাপকালে বলেন, গ্রুপ সিন্ডিকেট খুবই শক্তিশালী। তারা ইচ্ছামতো দর ওঠানামা করিয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সিন্ডিকেটের খেলার পরিণতি এখন মারাত্মকভাবে পড়েছে। তারা টার্গেট করে কোম্পানির শেয়ার কেনে। সময় হলে আবার বিক্রি করে। তাদের বিক্রি শেষ হলেও বাজারের সূচক কমতেই থাকে। শেয়ারের দরও কমতে থাকে। কিছুদিন পর আবার তারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা কেনার পর শেয়ার দর বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের বলয় ভেঙে দিতে যে শক্তিশালী ও দক্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকার দরকার ছিল তা নেই। আইন ভঙ্গ করে শীর্ষ পদ ধরে রেখেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তাদের নৈতিক ক্ষমতাই দুর্বল। ফলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ তারা নিতে পারেনি। চরম আস্থার সংকটে সবাই আতঙ্কিত। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের টাকা চলে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের পকেটে।

ইব্রাহীম খালেদ বলেন, বাজারে সুশাসন বলতে এখন কিছু নেই। যারা বাজারে আস্থা ফেরানোর জন্য শক্ত পদক্ষেপ নেবেন তারাই দর্শকের ভূমিকা নিয়েছেন। অথবা কিছুই করতে পারছেন না। কিছু করতে না পারার কারণ হচ্ছে তাদের কোনো কাজ নেই। শুধু দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন। দ্রুত এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে দরকার দক্ষ ও শক্তিশালী একটি কমিশন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পুনর্গঠন ছাড়া পরিস্থিতি বদলাবে না। আইনি কাঠামোয় শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।